ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে শহরের বহুল আলোচিত দারস শেফা প্রাইভেট হাসপাতালও ডায়াগনস্টিক সেন্টার যেন অপচিকিৎসার আখড়ায় পরিনত হওয়া একটি প্রতিষ্ঠান। দারুস শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সর্বশেষ অপচিকিৎসায় প্রসুতি লাভলী বেগম (২৬) নামের এক নারী মারা যান গত মাসের ২৯ মার্চ। ঘটনার পরদিন ৩০ মার্চ প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অপরেশন থিয়েটার সিলগালা করেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ইসরাত জাহান। প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র ডাক্তার রোকসানা পারভিন ও স্বত্তাধীকারী তার স্বামী ফিরোজ আহমেদের অপচিকিৎসার আখড়ায় পরিনত হওয়া দারুস শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রায়ই অপচিকিৎসার ঘটনা ঘটে এ প্রতিষ্ঠানে। প্রতিবারই গোপনে রোগী বা স্বজনদের ম্যানেজ করেন প্রতিষ্ঠানটির সত্বাধিকারী ডা: রোকসানা পারভিনের স্বামী ফিরোজ আহমেদ।গত মাসে প্রসুতি লাভলী বেগম মারা গেলে ওইদিনই তার স্বামী কালীগঞ্জ ওয়ালটন শোরুমের সেলসম্যান এনামুল কবির মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে মিটিয়ে নেন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ ওয়ালটন শোরুমের সেলসম্যান এনামুল কবির ক্লিনিক মালিকের নিকট থেকে টাকা নিয়ে আপোষের কথা কৌশলে এড়িয়ে যান। তাহলে কেন ডাক্তার ও ক্লিনিকের ব্যাপারে অভিযোগ থেকে সরে আসলেন,এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যস্ততা দেখিয়ে দ্রুত মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিনি। স্ত্রী মারা গেলেও টাকাই তার শান্তি মনে হল। উল্লেখ্য,২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কয়ারগাছি গ্রামের রানি বেগম নামের এক মহিলা ক্লিনিকে এসে স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করলেও তাকে জোর করে অপারেশন রুমে নিয়ে সিজার করেন ডা: রোকসানা পারভিন।সে সময় এ ডাক্তার রোগীকে অপারেশন বেডে মারধরও করেন। এ ঘটনায় ওই সময় কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন,রানি বেগমের স্বামী আল আমিন। ঘটনাটি সারাদেশে তখন ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল।শহরের দারুস শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১০ বেডের অনুমতি থাকলেও ৫০ বেডের ক্লিনিক পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির সত্বাধিকারী ফিরোজ আহমেদ। ক্লিনিকটিতে কোন ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী সেবিকা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়েই সেবিকার কাজ করায় কর্তৃপক্ষ। অপচিকিৎসা ও অব্যবস্থপনায় জর্জারিত ক্লিনিকটির অপারেশন থিয়েটার বন্ধ হলেও প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ না হওয়ায় বিষ্ময় প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগী ও কালীগঞ্জের সাধারন মানুষ। প্রতিষ্ঠানটির অব্যস্থাপনা ও অপচিকিৎসা নিয়ে দারুস শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সত্বাধিকারী ফিরোজ আহমেদের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,পরে কথা হবে এখন কাজে আছি।কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আলমগীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জমাও দিয়েছেন।