‘প্রাণীসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই শ্লোগান নিয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আমতলী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রাঙ্গনে দিনব্যাপী প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমতলী উপজেলা প্রানিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এম এ কাদের মিয়া। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আমতলী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতিয়ার রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাড: একেএম সামসুদ্দিন সানু। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানজুরুল হক কাওসার, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইফুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার, অ্যাড: এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি, খামারী মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ। প্রদর্শনীতে ৪০টি খামারের মালিকরা তাদের গরু, মহিষ, ছাগল ও কবুতর প্রদর্শনী করে। অনুষ্ঠান সঞ্জালনা করেন ডা. মো. রোকনুজ্জামান।
খামারী শাহিনুর বেগম বলেন, মোরা সবসময় আমতলী প্রাণিসম্পদ হাসাতাল থেকে বিনা মূল্যে সেবা পাই। এহন যে মোগো নাজমুল ছারে আছে হে মোগো সব সময় খোঁজ খবর লয়। হাঁস মুরগীর কোন সমস্যা হলে স্যারে সব সময় গ্রামে যাইয়া গরু ছঅগল ও হাসমুরগীর চিকিৎসা দেয়।
বেঠাকাটা গ্রামের গরুর খামারের মালিক মো. বাবুল মোক্তার বলেন, মোগো গরু ছাগলের কোন সমস্যা দেখা দিলে মোরা ছ্যারেরে খবর দিলে ছ্যারে মোগো বাড়ি আইয়া গরু দেইখ্যা আয়। হেএর লইগ্যা কোন টাহা পয়সা নেয় না।
আমতলী উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক জানান, প্রাণীসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের সামাজিক লক্ষ্য হলো সকলের জন্য নিরাপদ পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রানিজ আমিষ নিশ্চিত করার জন্য প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি ও দুºজাত পন্যের বাজার সৃষ্টি, ক্ষুদ্র খামারী ও উদ্যোক্তাদের প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলায় সক্ষমতা সৃষ্টি করা, বিজ্ঞানভিত্তিক লালন-পালন কৌশল অবহিত করা, উন্নত জাতের পশু পাখি পালনে আধুনিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা ও জনসাধারনের জন্য নিরাপদ প্রাণীজ অমিশ সরবরাহ নিশ্চিত করা। তিনি আরো বলেন, সে লক্ষে খামারীদের বিভিন্ন ধরনের উপকরন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রাণীসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আমতলীতে ১২টি উৎপাদন গ্রুপ রয়েছে। যার মোট সদস্য সংখ্যা ৪৪৩ জন। এদেরকে নগদ প্রনোদনাসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরন, প্রশিক্ষন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া এই ১২টি উৎপাদন দলে লাইভস্টক খামারী ফিল্ড স্কুল চালু রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় কুকুয়া ইউনিয়নে ১টি মডেল খামার, পৌরসভার গরুর বাজারের সাথে ১টি কাচাঁ বাজার তৈরী করা হয়েছে। এ ছাড়া খামারীদের মাঝে বিনামূল্যে কৃমিনাষক ওষুধ বিতরন, বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে রমজান মাসে পুষ্টির চাহিদা ও করোনা পরিস্থিতিতে খামারীদৈর জন্য বাজারজাত করার সুবিধার্থে ভ্রাম্যমান বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে দুধ ডিম ব্রয়লার মুরগী ও গরুর মাংস বিক্রয় করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলা ৭৭টি মুরগীর ঘর ও ৩২টি ছাগলের ঘর সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় আমড়া গাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিদিন মিল্ক ফির্ডিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সকল খামারীদের আমতলী উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে সকল ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে।