পিআর পদ্ধতি রাজনীতির এতিমদেরই কাম্য: রুহুল কবির রিজভী

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিকে বাংলাদেশের জন্য অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার মতে, পিআর পদ্ধতি রাজনীতিতে একেবারে এতিমদেরই কাম্য। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশের জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সরাসরি ভোট দিতে অভ্যস্ত, দলনির্ধারিত প্রার্থী নয়।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরের প্যারিস রোডের বালুর মাঠে ‘আমার দেশ আমার মাটি, গাছ লাগিয়ে করব খাঁটি’ শীর্ষক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি নিয়ে নানা সমালোচনা রয়েছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। এটিকে জোর করে টেনে আনা হচ্ছে। যারা রাজনীতিতে একেবারে এতিম, তারাই এই পদ্ধতিটি চায়। কারণ, পিআর পদ্ধতিতে জনগণ নয়, দলই ঠিক করে দেবে কারা তাদের প্রতিনিধি হবে। এ দেশের মানুষ সরাসরি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত। পিআর পদ্ধতিতে তারা বিভ্রান্তিতে পড়বে।”

নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা একতরফা নির্বাচন করে মজা পেয়েছিলেন। এখন অনেকে সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বিল্ডিংই যদি না থাকে তাহলে সংস্কার করবেন কীসের? সংস্কার করবে একটি নির্বাচিত পার্লামেন্ট।”

তিনি আরও বলেন, “অনেকে বলে বিএনপির গভর্ন্যান্স মেমোরি নেই। অথচ ১৯৮৯ সাল থেকে বিএনপির শাসনের স্মৃতি আছে। বিএনপি তিন-চার বার যোগ্যতার সঙ্গে দেশ শাসন করেছে। আমাদের আইনের শাসন, ন্যায়বিচারের শাসনের স্মৃতি আছে। এই স্মৃতি আছে বলেই, যখনই কোনো স্বৈরশাসক গণতন্ত্র ধ্বংসের পাঁয়তারা করেছে, তখনই বিএনপি একমাত্র পতাকাবাহী হিসেবে তার প্রতিবাদে রাজপথে থেকেছে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। তিনি তার বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তরে সর্বত্র নিমগাছ লাগানোর ঘোষণা দেন এবং আওয়ামী লীগের মতো আচরণ না করে জনগণের পাশে থেকে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহানগর উত্তরের বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান।

রাজনৈতিক অঙ্গনে পিআর পদ্ধতি নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে রিজভীর বক্তব্য বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছে। পিআর পদ্ধতি প্রবর্তনের চেষ্টা এবং নির্বাচনের সময়সীমা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন আরও সরগরম হয়ে উঠছে।