পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ এবং ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, দুটি বাড়ি ও অন্যান্য জমি-সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, নাফিজ সরাফাতের নামে রাজধানীর গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট, একটি ২০ তলা বাড়ি এবং পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এছাড়া গাজীপুর ও বাড্ডায় ২৫ কাঠা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে রয়েছে পাঁচটি ফ্ল্যাট, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর একটি চারতলা বাড়ি এবং আরও ১৩ কাঠা জমি। অন্যদিকে তাঁদের ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ানের নামে বনানী ও বারিধারায় সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
দুদকের আবেদনে জানানো হয়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি এবং গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল, পুঁজিবাজার থেকে অর্থ লোপাট এবং অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। দুদক অনুসন্ধান শুরুর পর তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসব স্থাবর সম্পত্তি অন্যদের কাছে হস্তান্তর বা বিক্রির চেষ্টা চালান। ফলে এসব সম্পত্তি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এছাড়া, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ গোপন করতে নাফিজ সরাফাত পরিবার বিভিন্ন অনিয়ম করেছে বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে। তাঁর বিও হিসাব এবং ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নাফিজ সরাফাত কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি হোটেল, বিদ্যুৎ, মোবাইল টাওয়ার এবং মিডিয়া খাতসহ বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আর্থিক খাতে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনের অবসানের পরই নাফিজ সরাফাতের আর্থিক অনিয়ম তদন্তে জোর দেয় দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক খাত থেকে অর্থ লোপাটের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।