আমরণ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে শুয়ে রাত কাটালেন ববি উপাচার্য

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
আমরণ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে শুয়ে রাত কাটালেন ববি উপাচার্য

অবকাঠামো উন্নয়নসহ তিনদফা দাবিতে আমরণ অনাশনে বসা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাত শিক্ষার্থীর পাশে মশারি টানিয়ে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে ভিসি অনশনকারী শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে অনশন ভাঙাতে না পেরে তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পাশেই মশারি টানিয়ে রাত কাটিয়েছেন।

এর ঘণ্টাখানেক আগে ববি উপাচার্য কর্মসূচিস্থলে এসে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীদের তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রকাশ পাবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপরই উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টাঙিয়ে রাত কাটান।

শুক্রবার দুপুরে অনশনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, অনশনের দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও রাষ্ট্র কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। জমি অধিগ্রহনের নানা ধাপ এগোচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আস্থার সংকটের কারনে শিক্ষার্থীরা অনশন পর্যন্ত পৌঁছেছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্র্বতীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের অনশনে বসার বিষয়টি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

ববি’র গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন-ইংরেজি বিভাগের শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অমিয় মন্ডল, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের মো. আবুবকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের তামিম আহমেদ রিয়াজ এবং আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শওকত ওসমান স্বাক্ষর।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আমরা একটানা ৩৬ দিন ধরে আন্দোলন করে আসলেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলো হলো-দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধি ও অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং পরিবহন সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত তিন দফার অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে-বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফেজের উন্নয়নের জন্য ফিজিবিলিটি টেস্টের বাজেট সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। পরবর্তীতে একনেকে বাজেট অনুমোদন বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং অনুমোদনের সাথে সাথে কাজ শুরু করার বিষয়ে সরকার, ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ দুইশ’ একর জমির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি ১৫০ একর জমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ করতে হবে। কোন জায়গা থেকে কতো একর জমি অধিগ্রহণ হবে এবং কতো দিনের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে সে বিষয়ে যৌক্তিক পরিকল্পনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। একইসাথে স্বতন্ত্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। তবে কতোদিনের মধ্যে এই পরিবহন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে তার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। নিজস্ব পরিবহন সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত বিআরটিসির পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে