মাছ শিকারে গিয়ে নিখোজের ৩ দিন পর জেলের লাশ উদ্ধার

এফএনএস (পাথরঘাটা, বরগুনা) : | প্রকাশ: ২ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
মাছ শিকারে গিয়ে নিখোজের ৩ দিন পর জেলের লাশ উদ্ধার

বরগুনার পাথরঘাটা সংলগ্ন বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে বাবা আব্দুল মান্না নিখোঁজের ৭ বছর পরে ছেলে সিদ্দিকুর রহমানও (৩০) গত ৩ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে পাথরঘাটা সংলগ্ন বলেশ্বর নদীর বিহঙ্গদ্বীপের উত্তর পাশের ধানসীর মধ্য থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় পাথরঘাটা স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জেলে সিদ্দিকুর রহমানের লাশ উদ্ধার করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার (সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে বাড়ি থেকে বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে নিখোঁজ হন সিদ্দিকুর রহমান। 

সিদ্দিকুর রহমান উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বড়টেংড়া হাজিরখাল এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের বড় ছেলে। তার ৯ ও ২ বছরের দুজন কন্যা সন্তান রয়েছে।

সিদ্দিকের স্ত্রী মনিরা আক্তার জানান, প্রতিদিনের মতো রাতে বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকার করতে যান তার স্বামী সিদ্দিকুর রহমান। ভোর রাতে ফিরে আসার কথা থাকলেও নৌকা ও ট্রলার ঘাটে ফিরে না আসায় চিন্তায় পড়ে যান তারা। এর পরেই বলেশ্বর নদীতে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারাও জেলে সিদ্দিকুর রহমানকে খুঁজতে বের হন। এক পর্যায়ে ডুবন্ত অবস্থায় তার নৌকাটি পেলেও সিদ্দিকুর রহমানকে পাওয়া যায়নি। পরে বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার দিকে গরুর খাবারের জন্য ধানসি কাটার সময় কিছু লোক বিহঙ্গদ্বীপ এর উত্তর পাশে পড়ে থাকতে দেখেন সিদ্দিকুর রহমানকে। এ সময় স্থানীয় জেলে রুবেলকে ডাক দিলে তিনি এসে লাশ সনাক্ত করে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। তিনি আরো জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার ব্যাক্তি ছিলেন তিনি। তাদের সংসারে ৯ ও ২ বছরের দুজন কন্যা সন্তান রয়েছে এবং ছোট দুজন ভাই রয়েছে। সিদ্দিককে দিয়েই তাদের সংসার চলতো। এখন কি নিয়ে তারা বাঁচবে বলে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মনিরা। 

বরগুনা জেলা মৎস্য জীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, দুদিন ধরেই আবহাওয়া খারাপ থাকায় নদীতে ৩ নম্বর সংকেত চলছে। এই সংকেতের কারনে নদী উত্তাল থাকায় হয়তো ট্রলারটি নিয়ে সাগরে ডুবে গেছে। আমরা তাদের খোঁজ খবর নিয়ে পরিবারের সহায়তার জন্য কাজ করছি।

পাথরঘাটা ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত স্টেশন লিডার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, নিখোঁজের সংবাদ শোনার সাথে সাথেই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছি। নিখোঁজের ৩ দিন পরে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে তাকে উদ্ধার করতে পেরেছি। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান জানান, জেলেদের জন্য আমাদের সব সময়ই সহায়তা থাকে, ইতমধ্যে ওই পরিবারকে প্রাথমিক সহায়তা করা হয়েছে। নিখোঁজের পর থেকে আমরা সব সময়ই খোজ রেখেছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে মারা গেছে কিনা তা ময়না তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। বিয়য়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, তাদের মাধ্যমে পরিবারেরকে সহায়তা করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে