গাজীপুরের কাপাসিয়ায় স্বামীর পরকীয়ার জ¦ালা সইতে না পেরে দুঃখ কষ্টে গত রোববার রাতে মোছাঃ তাসলিমা নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে টোক ইউনিয়নের ডুমদিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের রাজু মিয়ার কন্যা। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই মোঃ সহিদ মিয়া বাদী হয়ে চার জনের নামে কাপাসিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পনের বছর আগে তাসলিমাকে একই গ্রামের মৃত আবদুল মান্নানের পুত্র রফিকুল ইসলামের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেয়া হয়। গত দুই বছর যাবৎ একই গ্রামের রহিমা খাতুনের সাথে রফিকুলের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানির পর থেকে তাসলিমা প্রতিবাদ জানালে তার উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে স্বামী রফিকুল ইসলাম। একপর্যায়ে তাছলিমা পিতার বাড়িতে এসে প্রায় দুই মাস আগে আশ্রয় গ্রহন করে। প্রায় তিন মাস আগে রফিকুল স্থানীয় ইউপি সদস্য ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শালিশ বৈঠকে আর কোন অপকর্ম না করার শর্তে তাছলিমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই রফিকুল রহিমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যায়। গত রোববার সন্ধ্যায় রফিকুল প্রেমিকা রহিমার বাড়িতে অবস্থান করছে, এ সংবাদ পেয়ে তাসলিমা ঐ বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে একঘরে একত্রে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এ ব্যাপারে সে প্রতিবাদ করে এবং বিষয়টি রফিকুলের ভাই আল-আমীন ও শাহজাহান সহ আশপাশের লোকজনকে জানায়। কিন্তু তারা এর কোন প্রতিকার না করে উল্টো তাকে দোষারোপ করে তাড়িয়ে দেয়। তাদের অপমান সইতে না পেরে তাছলিমা রাতেই স্বামীর বাড়িতে ফিরে বিষ পান করে। পরে মুমূর্ষ অবস্থায় কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে মধ্যরাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে স্বর্ণা আক্তার (৮) ও মারুফ (৬) নামে দুটি সন্তান রয়েছে।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব কুমার দাশ জানান, তাসলিমার ভাই সহিদ মিয়া বাদী হয়ে ১০ জুন সোমবার কাপাসিয়া থানায় চার জনের নামে মামলা (৯)১০/০৬/২০১৯ দায়ের করেছে। আসামিরা হলো তাছলিমার স্বামী রফিকুল, রফিকুলের প্রেমিকা রহিমা, রফিকুলের ভাই মোঃ আল-আমীন ও শাহজাহান। রফিকুলকে রাতেই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।