স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ধেয়ে আসছে ‘ফণী’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বরিশালে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে দমকা হাওয়ার সাথে শুরু হয় বৃষ্টি। আকাশ ঘণ কালো মেঘে ঢেকে যায়। কিছুক্ষণ মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার পর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও হালকা বাতাস অব্যাহত হয়েছে। নদীতেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনভর প্রচন্ড তাপদাহ শেষে এ বৃষ্টিতে আবহাওয়া কিছুটা শীতল হয়েছে। হঠাৎ বাতাসের সাথে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রাস্তায় থাকা মানুষজন দ্রুত নিরাপদস্থানের দিকে ছুটতে শুরু করে। এদিকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে ফণী আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। আতঙ্কিত এসব মানুষ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।
এদিকে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য দ্বিতীয় দিনের ন্যায় শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাইকিং করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ‘ফণী’ আঘাত হানার আশঙ্কায় বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে দ্বিতীয় দিনের মতো শুক্রবারও সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে গত দুইদিন থেকে দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে ‘ফণী’ মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। জেলায় ২৩২টি সাইক্লোন শেল্টার, চারশ’ স্বেচ্ছাসেবক ও প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিমের পাশাপাশি প্রতি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনও তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। তারা এরইমধ্যে ৩১টি হটলাইন নম্বর চালু করেছে।
জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিকেল টিমকে নিরাপদ, গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি সরঞ্জামসহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস জানান, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভাগের মাঠপর্যায়ে ২৮ হাজার ৭৬২ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি এক হাজার ৮৩৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা রাখা হয়েছে বরিশাল বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব অফিস আদালত।