সিরাজদিখানে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের তৎপরতায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে মডেল টেস্ট পেপার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১২৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ বিদ্যালয়ে প্রায় ৬ শতাধিক টেস্ট পেপার দেয়া হয়েছে। উপজেলার ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো ৬ শতাধিক বই মজুদ রয়েছে। যেখানে টেস্ট পেপার লাইব্রেরী থেকে বিক্রি হওয়ার কথা সেখানে শিক্ষকদের মাধ্যমে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বই গুলো তার জিম্মায় রেখেছেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন। শিক্ষা অফিসার বলছেন ভিন্ন কথা।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখানে উপস্থিত বই নেওয়ার জন্য। তবে শিক্ষকরা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন তারা বিভিন্ন কাজে এসেছেন ইছাপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অথচ কোন স্কুলে কয়টা করে বই যাচ্ছে তার ও একটি নোট ছিল প্রধান শিক্ষক আসাদের নিকট। তিনি সেগুলো লুকিয়ে ফেলেন কিন্ত একটি শিট টেবিলে দেখা যায়। এলাকাবাসী অনেকে জানান লাইব্রেরীর বই স্কুলে ঢোকে আর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক এসে সকাল থেকে রিকসা ও অটো রিক্সায় করে নিয়ে গেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টেষ্ট পেপার ও গাইড বই মজুদ করে বিক্রি করছে শিক্ষকরা এমন খবর পেয়ে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির মুন্সীগঞ্জ জেলার সভাপতি উমাশংকর সরকার সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় আরো কিছু লাইব্রেরীর মালিকগণ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
উমাশংকর বলেন, এই বই গুলো উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেনের নির্দেশ ক্রমে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশাদুজ্জামান অসাদ মজুদ করেন এবং তার নেতৃত্বে উপজেলার ১২৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাধমে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বিক্রি করছেন। কোন শিক্ষা অফিসার বা কোন শিক্ষক কোন নোট বা গাইট বিক্রি করতে পরে না। আইনে তা বাধা আছে। তিনি আরো বলেন, ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদ এর কাছ থেকে জেনেছি যে শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেনের আদেশ ক্রমে এ স্কুলে বই গুলো স্টক করা হয়েছে। গতবছরও এই শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু হাতে নাতে ধরা যায়নি। এ বিষূে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা না কোন শিক্ষক আর ঘটাতে না পারে।
ইছাপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক আশাদুজ্জামান আসাদ বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার বেলায়েত হোসেন স্যার গত (বুধবার) রাতে আমাকে বলেন আপনার স্কুলে বই আসবে। স্কুলের পাশে ফারুকের লাইব্রেরী আছে তার ভাই এসে বই গুলো নিয়ে যাবে। সকালে ফারুকের ভাই কিছু বই নিয়ে গেছে আর কিছু বই এখন স্কুলে আছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন মূলক কিছু বইয়ের সাথে অন্য বই গুলো দিয়ে দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশফিকুন নাহার বলেন, কিছু টেস্ট পেপার আমার জিম্মায় রেখেছি। ওই টা স্কুলের পাশের দোকানের বই। সে ছিলনা বলে এখানে রেখে গেছে। সে হাসপাতালে থাকার কারনে আসতে পারে নাই। তাকে আমার এখানে আসতে বলেছি, তার সাথে কথা বলে বই গুলো দিয়ে দিব। কিন্তু প্রমান না দেখাতে পারলে আর যদি শিক্ষক এই ঘটনায় জড়িত থাকে তাহলে ব্যবস্থা নিব।