কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁওর কলেজ গেইট এলাকায় হানিফ পরিবহনের বাসের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী একজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মুমূর্ষাবস্থায় আরো তিনজনকে চকরিয়ার মালুমঘাট খ্রিষ্টান হসপিটালে নেয়া হয়। সেখান থেকে এক শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। আহতদের অবস্থাও আশংকাজনক। আহতরা ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন তথা কেজি স্কুলের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঈদগাহ কলেজ গেইটের বাইতুল আমান জামে মসজিদের সামনে এ ভয়াবহ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ইমরান (১৮) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও কালিরছরা উত্তরপাড়ার প্রবাসী আবু তাহেরের ছেলে ।
আর আহতরা হল কলিরছরার নুরুল আলমের ছেলে শামীমুর রহমান (১৭), শামশুল আলমের ছেলে শামীমুল আলম রাহুল (১৭) ও নুরুল আলমের ছেলে জয়নাল আবেদীন (১৭)। তারা সবাই ঈদগাহ কেজি স্কুলের বিজ্ঞান ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের মাঝে শামীমকে আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শামিম শহীদ চৌধুরী ও একে জাহাঙ্গীর বাঙালি জানান, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৯টার দিকে এক মোটরসাইকেলে চার শিক্ষার্থী মিষ্টি কিনতে ঈদগাঁও বাস স্টেশনে যায়। মিষ্টি নিয়ে ১০টার দিকে বাসায় ফেরার কালে কলেজ গেইট এলে চট্টগ্রামমুখী হানিফ পরিবহণের (চট্টমেট্টো-ব-১১-০২৪৩) বাসটি রং সাইডে এসে মোটর সাইকেলকে চাপা দেয়। এতে আরোহীসহ মোটর সাইকেলটি বাসের নিচে ঢুকে যায়। মোটরসাইকেল ও আরোহীসহ গাড়িটি সামনে বেশ কিছুদুর চলে আসে। এতে ক্ষতবিক্ষত আরোহীদের মাঝে ইমরান মারা যায়। স্থানীয়রা দ্রুত এসে বাসের নিচ থেকে মোটরসাকেল আরোহীদের বের করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সবাইকে চকরিয়ার মালুমঘাট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শামীমকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাসটি সড়কের একপাশে রেখে চালক হেলপার পালিয়ে যায়।
এদিকে শিক্ষার্থী নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে এসে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ায় ভয়ে উভয়পাশে আটকা পড়ে যানবাহন। শিক্ষার্থীরা বাসস্টেশন এলাকায় টায়ার ও অন্য দ্রব্য দিয়ে আগুন দেয়। এতে প্রায় ২ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর রেশ দক্ষিণে প্রায় রামু এবং উত্তরে ইসলামপুর পর্যন্ত পড়ে। ঈদগাহ শাহ জব্বারিয়া আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাইনুদ্দিন ও ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন এর শিক্ষক আকতার কামাল ও শাহাবুদ্দিন গুরুতর আহত ৩ শিক্ষার্থী তাদের স্কুলের বলে নিশ্চিত করেন। ইসলামাবাদ দারুল আরকাম একাডেমির শিক্ষক তৈয়্য ব জালাল দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে বলে জানান।
খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ও রামু দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন (কেজি স্কুল)’র প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আলহাজ্ব কামরুল হক চৌধুরী জানান, তাদের কিছু শিক্ষার্থী মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) এসআই সনজিদ জানান, উপস্থিত লোকজন জানিয়েছেন দূর্ঘটনায় ২ জন মারা গেছেন। আগুনে পোড়া ঘাতক বাস ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করে রামু ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশকে জিম্মায় দেয়া হয়েছে।