নীলফামারীর ডিমলায় করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাজারে বাড়ছে জনসমাগম। বিভিন্ন ব্যবসায়ী নির্ধারিত সময়ের পরও খোলা রাখছেন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি। উপজেলায় ইতোমধ্যে ৩জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি লগডাউন করা হয়েছে। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে উপজেলার বাজারে বাজারে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিমলা থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার টিম কোন বাজারে যাওয়ার সাথে সাথে দোকান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। আবার প্রশাসন সেখান থেকে চলে গেলেই খোলা হয় দোকানপাট। এ যেন প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের চোর পুলিশ খেলা। বাজার গুলোতে মানুষের ভিড় কমানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বাজারগুলোতে মানুষের ভিড় সবচেয়ে বেশি। উপজেলার শঠিবাড়ী, ডালিয়া, ঝুনাগাছচাপানী, নাউতারা, কলোনী, ঠাকুরগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট সময়ের পরেও দোকানপাট খোলা রাখেছেন। দোকানপাট খোলা রাখার কারণে কমানো যাচ্ছেনা জনসমাগম।
অপর দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে ডিমলা উপজেলা সদরসহ ই্উনিয়নে অবস্থিত বাজার গুলোতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের পরেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় মানা হচ্ছে না করোনা সতর্কতা। তাদের ধারণা, মৃত্যু লেখা থাকলে কোনো সতর্কতাই কাজে আসবে না। এ ধরনের লোক নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ডিমলা উপজেলা প্রশাসন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে মাইকে সতর্কতামূলক প্রচারণা করা হয় উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে। তাতেও মানুষ সচেতন না হলে ইউএনও তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডিমলার সর্বসাধারণের উদ্দেশে প্রায় প্রতিদিন সতর্কতামূলক বিভিন্ন ষ্টাটার্স দিয়ে আসছেন। এবং নিজের হাতে হ্যান্ডমাইক তুলে নিয়ে প্রতিটি এলাকায় মানুষকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ জানান। সড়ক ও দোকানপাটে জনসমাগম বন্ধে গত ১মাস ধরে দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা সংক্রমণ রোধ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই তিনি চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জয়শ্রী রানী রায বলেন, আমরা প্রতিটি হাটে বাজারে থানা পুলিশের সগযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। মানুষদের সচেতন করার আপ্রান চেষ্টা করছি। জনসমাগমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষদের নিজেদের মধ্যে সচেতনতাবোধ থাকতে হবে। আমাদের প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে।
এলাকার সচেতন মহল করোনা সংক্রমণ রোধে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়ের মতো সকল জনপ্রতিনিধি, সামাজিক সংগঠন ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের আড্ডা ও গণজমায়েত বন্ধে ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ একজন সরকারি কর্মকর্তাকে দাপ্তরিক নানা বিষয়ও সামাল দিতে হয়। করোনার প্রভাব বিস্তার লাভ করলে আমাদের ঠাঁই হবে লাশের স্তুপে। তাই নিজ নিজ দায়িত্বে বাড়িতে অবস্থানের বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। যারা ভাবেন এটা কেবল প্রশাসনের কাজ, তাদের ধারণা ভুল এবং অমানবিক।