রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সদরের অবস্থিত ফাজিল মাদ্রাসার এক প্রভাষক দীর্ঘ ৪বছর ধরে তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এ বিষয়টি থানা পুলিশকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। ইতিমধ্যে তাকে চাকুরী থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রুহুল আমীন ও ওই মাদ্রাসার অন্যান্য প্রভাষক নিরপেক্ষ একাধিক সুত্রে জানা গেছে,উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের বেতকাপা গ্রামের বাসীন্দা আজিজার রহমান মন্ডলের পুত্র শাহনুর মন্ডলকে বিগত ২০১১ সনের ১৫ নভেম্বর পীরগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসায় ইংরেজী বিষয়ের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগ পাবার পর তিনি স্ত্রী রেফা খাতুন,শ্যালীকা রেশমা খাতুনকে নিয়ে উপজেলা সদরের প্রজাপাড়া গ্রামের এক বিলাস বহুল ভাড়াটে বাসায় বসবাস করেন। মওকা বুঝে শিক্ষকতার পাশাপাশি শাহনুর মন্ডল সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরী প্রদানকারী চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সহ একাধিক সহকর্মীদের প্রভাবিত করা ছাড়াও একাধিক বন্ধু -বান্ধব আতœীয়-স্বজনের পুত্র কন্যাকে চাকরী দেয়ার প্রলোভনে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। দীর্ঘদিনেও চাকুরী না হওয়ায় চাকুরী প্রত্যাশীরা টাকা ফেরতের জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে টাকা গ্রহনের বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ে। ফলে অবস্থা বেগতিক দেখে প্রভাষক শাহনুর মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ন্ত্রনের বাইরে যাওয়ায় এক পর্যায়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির ২০১৫ সনের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এক সভায় তার বেতন ভাতাদি বন্ধসহ তাকে সাময়ীক বরখাস্থের সিদ্ধান্ত নেন। সুযোগ বুঝে রাতারাতি তল্পিতল্পাসহ পীরগঞ্জস্থ ভাড়াটে বাসা থেকে শাহনুর স্ত্রী সন্তান ও শ্যালিকা কে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এরপর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তার গ্রামের বাড়ি সহ নিকটাতœীয়দের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তার কোন সন্ধান না পাওয়ায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রুহুল আমীন বিগত ২০১৬ সালের ২১ জুলাই পীরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। যার নম্বর ৫৭৫। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন-শাহনুর উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর-০১৮২৩০২২২২১ বন্ধ রয়েছে। এদিকে মাদ্রাসায় ইংরেজী বিষয়ক শিক্ষক না থাকায় প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পলাতক শাহনুরের বৃদ্ধ পিতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন-“শাহনুর যে আমার পুত্র এটা পরিচয় দিতেও ঘৃণা হয়। যতগুলো পরিবারকে সে পথে বসিয়েছে, কিভাবে এর সমাধান হবে” ? এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়রী করা হয়েছে। ওসি সরেস চন্দ্র বলেন-অভিযোগ রয়েছে,বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে শাহনুর পালিয়েছে। অবশ্য তাকে গ্রেফতারের চেষ্টাও চলছে।