সরাইল থানা এখন চলে দালালের মাধ্যমে। চারিদিকে বেড়ে গেছে মাদকের দৌরাত্ব। প্রকাশ্যে মাসোয়ারায় চলছে জুয়া। থানায় বসে ওসি আড্ডা দেন দালাল জুয়ারী ও মাদকাসক্তদের সাথে। যোগদানের ৩ মাস পরও উপজেলার কোন সভায় যোগদান করেননি তিনি। ওসি সাহেব মনে হয় চাঁদের দেশ থেকে এসেছেন। সরাইলের মানুষের চাঁদের দেশের কর্মকর্তার দরকার নেই। সোমবার সরাইল উপজেলার মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় উপরোল্লেখিত কথা গুলো বলেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। এ ছাড়া একাধিক জনপ্রতিনিধিও মাদক বিস্তৃতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংশোধন হওয়ার জন্য ওসিকে এক মাসের সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। সভা সূত্র জানায়, গতকালের সভায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বর্তমান সময়ে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও মসজিদের ইমামদের করণীয় ব্যাখ্যা করেন ইউএনও। নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মোসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মাদকের বিস্তৃতি ও জুয়া নিয়ে ক্ষাভ প্রকাশ করেছেন অনেক বক্তা। রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, সরাইলে ওসি সাহেব এখন আধুনিক জুয়া চালু করেছেন। সকাল বাজারে নিয়মিত বড় ধরণের জুয়া চলছে। তারা প্রতিদিন থানাকে দেয় ৩ হাজার টাকা। সৈয়দটুলা এলাকায়ও চলছে জুয়া। মাদক তো ওপেন সিক্রেট। কাউন্টার মামলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন কোন ঘটনায় মামলা হলে অপর পক্ষকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে কাউন্টার মামলা করানো হয়। তিনি নিয়মিত সন্ধ্যার পর জুয়ারীদের নিয়ে আড্ডা দেন। ওসি সাহেব থানায় গোযদান করেছেন ৩ মাস হয়েছে। আজ পর্যন্ত তিনি উপজেলার কোন সভায় উপস্থিত হননি। কোন অফিসারের সাথে পরিচিত হওয়ার প্রয়োজনও মনে করছেন না। এমন একটা ভাব দেখাচ্ছেন। মনে হচ্ছে তিনি চাঁদের দেশ থেকে এসেছেন। সরাইলের মানুষের চাঁদের দেশের ওসির দরকার নেই। কাজের ওসির দরকার। দালাল, মাদক, জুয়া ও কাউন্টার মামলা বন্ধ করতে ওসিকে এক মাস সময় দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে সংশোধন না হলে সরাইলের মানুষ জানে ওসিকে কিভাবে বিদায় করতে হবে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম বলেন, পাকশিমুলের যুবলীগ নেতা আজিজের বিরূদ্ধে ছাত্রদলের ক্যাডার রিফাতের দায়ের করা মিথ্যা মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার আলোচনা হয়েছিল গত আইন-শৃঙ্খলা সভায়। তা না করে ওসি সাহেব দিয়েছেন চার্জশীট। দালালের কথায় এখন চলে থানা। রাজাকারের উত্তরসূরি নাজমুল ও আকরাম নামের দুই যুবকের ইশারায় গ্রেপ্তার, মামলা নথিভূক্তি ও আটক বাণিজ্য করছেন থানা কর্তৃপক্ষ। শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদ রাজ্জি বলেন, করোনার সুযোগে আমার ইউনিয়নে মাদকের উৎসব চলছে। সন্ধ্যার পর মনে হয় শাহবাজপুর যেন মাদকের হাট। গত ২৬ মার্চের পর মাদকের বিষয়ে পুলিশের কোন তৎপরতা চোখে দেখছি না। ইউনিয়ন কেন উপজেলায়ও অনেক দিন ধরে মাদক প্রতিরোধে কোন কার্যক্রম দেখছি না। শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, কালিকচ্ছের ছুলামদে ছেয়ে যাচ্ছে আমার ইউনিয়ের ২টি গ্রাম। এছাগা গাঁজা ও ট্যাবলেট কিছু লোকে বিক্রি করছেন দেদারছে। সভায় বলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন- সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, অরূয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম ও সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুর রহমান বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে ২/১ টা কাউন্টার মামলা নিতে হয়েছে। জুয়ার বিষয়ে আমার খুব একটা জানা নেই। সম্প্রতি অরূয়াইল থেকে ১০ জুয়ারীকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আমাদের জনবল কম। তারপর করোনা ও মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্থ থাকায় মাদকের অভিযান কম হচ্ছে। যোগদান করেছি মাত্র ৩ মাস। এলাকা চিনতে জানতে ৬ মাস লাগে। ইনশাল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।