আসন্ন ঈদুল আজহায় দশদিন ছুটি, বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে টঙ্গীর ভিয়েলাটেক্স নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। শনিবার সকালে গাজীপুরা সাতাইশ রোডে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকাণ্ডময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ রাখে। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি ছোড়লে অন্তত ১০ শ্রমিক ও শ্রমিকদের নিক্ষিপ্ত ইটপাটকেলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার এস আলমসহ ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সকাল ১০টায় অবরোধ চলাকালে ঢাকাণ্ডময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ আসন্ন ঈদুল আজহায় দশদিন ছুটি, ঈদ বোনাস ও শতভাগ বেতন-ভাতা দিচ্ছে না জানতে পেরে কারখানার সামনে শনিবার সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা ঢাকাণ্ডয়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পুলিশ বিক্ষুব্দ শ্রমিকদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বললে তারা উত্তেজিত হয়ে মহাসড়কে চলাচলরত গাড়ি ও আশপাশের বিভিন্ন কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর চালায়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে ১০জন শ্রমিক আহত হয়। এ সময় শ্রমিকদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার এস আলমসহ ৫জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার এস আলম জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দশ দিনের ছুটির জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান শ্রমিকরা। দশদিনের ছুটির স্থলে কারখানা কর্তৃপক্ষ আটদিন ছুটি ঘোষণার নির্দেশ দিলে কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে শনিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা কারখানার সামনে থেকে সরে ঢাকাণ্ড ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে। এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা আশপাশের কারখানা ও মহাসড়কে চলাচলরত গাড়িতে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় ৫জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে পুলিশ ১০-১২ রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং মহাসড়কে যান চলাচল শুরু করে।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কারখানাটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, শ্রমিকদের দাবিকৃত দশদিনের ছুটির জায়গায় আটদিনের ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। এরপরও তারা আন্দোলনে নামে, এই আন্দোলনটি অযৌক্তিক।