করোনা মহামারিতে সরকারিভাবে স্কুল বন্ধ হলেও লক্ষ্মীপুরে জমে উঠেছে কোচিং বাণিজ্য। এর মধ্যে স্কুল সময়ে কোচিং এসে স্কুল ভবনের সঙ্গে থাকা লোহার পিলার পরে গুরুত্বও আহত প্রাণ হারায় রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ডালিয়া আক্তার (৯)। শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার সকালে সহপাঠিদের সঙ্গে উত্তর চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোচিং এ অংশ নেয় ডালিয়া আক্তার। এ সময় ওই বিদ্যালয়েল সঙ্গে থাকা একটি লোহার পিলার হেলে পরে শিশু শিক্ষার্থী ডালিয়ার ওপর। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। ডালিয়া রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের টিটু কবিরাজের মেয়ে।
নিহতের স্বজনরা জানান, ডালিয়াকে স্কুল রুমে চিকিৎসার অভিনয়ে ১ ঘন্টা আটকে রাখা হয়। তারসহকর্মীরা ডালিয়ার মুখে ফেনা ও রক্ত ঝড়তে দেখে দৌড় বাড়িতে এসে খবর দেয়। পরে ঢাকায় নিলে ডালিয়া মারা যায়। ডালিয়ার মৃত্যুতে তার সহপাটি ও স্বজনরা শোক সমবেধনা জানিয়ে শিক্ষকদের সরকারি নিষেধাঙ্গা অমান্য করে কোচিং বন্ধের দাবী জানান। তারা আরো জানান,করোনা মাহমারি এ সময় স্কুল বন্ধ রয়েছে। স্কুল সময়ের বাহিরে শিক্ষকদের চাপে চলে কোচিং।
জানাগেছে, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কয়েকটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের ৪/৫ জন শ্রেণি শিক্ষক দিয়েই চালু রেখেছেন কোচিং কাজ। এতে করে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকের আর্থিক সংঙ্কট ও করোনা ভাইরাস ক্লাশবন্ধ থাকায় তাদের বাধ্য হয়েই ক্লাস নিতে হচ্ছে কোচিং। ঘরে উঠেছে রায়পুরের কয়েকটি ইউনিয়নে প্রত্যেক শ্রেনি শিক্ষকের এক একটি কোচিং সেন্টার। একই অবস্থা সদর উপজেলার মদিনউল্লাহ্ হাউজিংসহ রামগঞ্জ,কমলনগর ও রামগিতেও।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান,শিক্ষার্থীদের ভবিশ্যতের কথা ভেবে তারা প্রাঠদান করছেন। এতে তারা সামান্য টাকা নিচেছন। তবে বাধ্য করা হচ্ছেনা। এতে অন্যায়ের কী বলে কথা ছুড়েন তিনি।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মো:আবুল হোসেন জানান, স্কুল বন্ধ চলছে কোচিং। সরকারি নিষেধাঙ্গা উপেক্ষা করে কী করে চলে কোচিং তা তদন্ত জরুরী।
ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন উত্তর চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার। রেখেছেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও।
রায়পুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে,এম মুস্তাক আহমেদ জানান,সরকারি নিষেধাঙ্গায় কী করে চলে কোচিং তা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ছাড়া ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে শিক্ষককে ডাকা হয়েছে। এরপর তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনে বিভাগীয় উধ্বতন কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করা হয়েছে।