চুক্তি সম্পাদনের পর গাইবান্ধা জেলার ১৫০ জন মিলার সরকারি খাদ্য গুদামে এক ছটাক চালও দেয়নি। এমনকি নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ১৫ দিন বাডড়িয়েও চাল দিতে ব্যর্থ হন তারা। ফলে তাদের জামানত স্থগিত করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, যেসব মিলার সরকারি খাদ্য গুদামে এক ছটাক চালও দেয়নি, তাদের জামানত স্থগিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ ও প্রয়োাজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে। অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার ৮৮৯ জন মিলারদের কাছ থেকে ২৩ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ১ হাজার ৬২৮ মেট্রিক টন আতব চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। প্রতি কেজি সিদ্ধ চাল ৩৬ টাকা ও প্রতি কেজি আতব চাল ৩৫ টাকা সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয়। চলতি বছরের ৭ মে থেকে সরকারিভাবে চাল ক্রয় শুরু করা হয়।
চাল ক্রয়ের নির্ধারিত শেষ তারিখ ছিল ৩১ আগস্ট। এর মধ্যে ৬৭৫ জন মিলার সরকারি গুদামে শতভাগ এবং ৬৪ জন আংশিক চাল সরবরাহ করেন। কিন্তু জেলার অবশিষ্ট ১৫০ জন মিলার ৩১ আগস্টের মধ্যে চাল দিতে ব্যর্থ হন। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়িয়েও যথাসময়ে তারা চাল সরবরাহ করতে পারেননি। তারা চুক্তি করেও সরকারি খাদ্য গুদামে এক ছটাক চালও দেয়নি। এ কারণে তাদের জামানত স্থগিত করা হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, জেলার সাতটি উপজেলায় ১১টি সরকারি খাদ্য গুদাম রয়েছে। এসব গুদামে ধান চালের ধারণ ক্ষমতা ৩২ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। কিন্তু বর্ধিত সময় অনুযায়ী ক্রয়ের শেষদিন পর্যন্ত ১৯ হাজার ২৮৩ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ১ হাজার ২৪৭ দশমিক ৪০০ মেট্রিক টন আতপ চাল ক্রয় করা হয়েছে। ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় গুদামগুলো অনেকটা ফাঁকা পড়ে আছে।
চুক্তি করেও কেন চাল দেননি জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিলার বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে চালের দাম বেশি। চালের বরাদ্দ পেয়েছি ৮ মেট্রিক টন। প্রতি কেজিতে ৪-৫ টাকা লোকসান হলে কত টাকা লোকসান হবে। তাই চাল দেয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে করার কিছু নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক মিলার বলেন, এবার ৭ মেট্রিক টনের বরাদ্দ পেয়েছিলাম। প্রথম দিকে বাজারে চালের দাম কম ছিল, তখন ৪ মেট্রিক টন দিয়েছি। পরে বাজারে চালের দাম বেশি হওয়ায় আর দিতে পারিনি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, যারা গুদামে আংশিক চাল দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।