নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য অভিভাবকদের নিকট থেকে সরকারি নিয়ম বহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে। স্কুলে ভর্তি ও উপবৃত্তি সংক্রান্ত কাজে শিক্ষার্থীদের জন্ম সনদ প্রয়োজন হওয়ায় ৫০ টাকার স্থলে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত আদায় করে ইউপি সচিব আবু সুফিয়ান মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ ছাড়া জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে আসা লোকদেরকে হয়রানি করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা পরিষদের সামনে ওই ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন হতে ৫ বছর পর্যন্ত কোন শিশুর জন্ম নিবন্ধন সনদের ফি মাত্র ২৫ টাকা। বয়স ৫ বছরের অধিক হলে ইংরেজি ও বাংলায় জন্ম নিবন্ধন সনদ ফি ৫০ টাকা নেয়ার বিধি রয়েছে। কিন্তু নিতাই ইউপি সচিব সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামত জন প্রতি ৩শ থেকে ৫শ’ টাকা আদায় করছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, নিতাই ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের নিকট থেকে তার দুই ছেলে মোস্তাকিম ও মোজাহিদ এর জন্ম নিবন্ধ সনদের জন্য ওই ইউপি সচিব ১হাজার টাকা আদায় করেছেন। কাচারীপাড়া গ্রামের জিয়ারুলের নিকট থেকে তার তিন ছেলে শাওন, শাকিল ও সাফির জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য ১ হাজার ৫০ টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া নিতাই পীরপাড়া গ্রামের মঞ্জুরুলের দুই ছেলে ইমরান ও ইশানের জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য ৬৫০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে দুই সপ্তাহ ধরে প্রায় শতাধিক অভিভাবকের নিকট থেকে ৫০ টাকার স্থলে প্রতিজনের জন্ম নিবন্ধনের জন্য ৩ থেকে ৫শ’ টাকা করে আদায় করে মোটা অংকের টাকা পকেটস্থ করেছেন। এদিকে নিতাই কাচারীপাড়ার আবুল কালামের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৬৫) তার নাতির ও সাতঘটিপাড়া গ্রামের জাহেদুল ইসলাম তার ছেলে ও মেয়ের জন্ম সনদের জন্য চাহিদার কম টাকা দিতে চাওয়ায় বিভিন্ন অযুহাতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাদেরকে হয়রানি করতেছেন। এভাবে হয়রানি ও একাধিক অভিভাবকের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করায় তারা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ওই ইউপি সচিবের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে নিতাই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু সুফিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য জনপ্রতি ১শ’ ৫০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। সরকারী নিয়মের অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন কেন জানতে চাইলে তিনি জানান বিভিন্ন খরচ আছে তাই বারতি টাকা নেয়া হচ্ছে।
এব্যাপারে নিতাই ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পরিষদে গিয়ে ও মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা বেগম জানান, জন্ম নিবন্ধ সনদের জন্য সরকারী নিয়ম বহির্ভূত কেউ একটি টাকাও বেশি নিতে পারবেনা। এ বিষয়ে আমি ইউপি সচিবদেরকে জানিয়ে দিয়েছি। নিতাই ইউপি সচিবের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।