সাতক্ষীরা জেলা তথা খুলনা বিভাগের মধ্যে আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত দেবহাটা উপজেলায় এবারে কৃষকের বাগানে বাগানে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে চারিদিক মুখরিত হয়ে উঠেছে। প্রতিটি বাগানে যে হারে মুকুল এসেছে, কোনরকম বালাই ছাড়া আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবারে আমের বাম্পার ফলন হতে পারে বলে একাধিক বাগান মালিকসহ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। বাগান মালিকগণ এখন থেকেই সকল প্রকার কীট পতঙ্গের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে বাগানে মুকুলেই কীটনাশক স্প্রে করে চলেছে। গাছে আমের মুকুল দেখে প্রতিটি বাগান মালিক নাওয়া খাওয়া ছেড়ে এখন থেকেই বাগানে সময় কাটাতে শুরু করেছেন। উপজেলার অসংখ্যা বাগান মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে আমের ব্যাপক ফলন হতে পারে বলে তারা আশা করছেন। তবে অনেক বাগানের মুকুলের অবস্থা তেমন একটা ভাল নয় বলে বাগান মালিকগন জানিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা আবহাওয়া অনুকূলে রাখলে এবারে প্রতি বিঘা বাগানে অনেক টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন বলেও প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। দেবহাটা উপজেলার আমের বাগানে ব্যাপক হারে ফলনের জন্য গাছের অপুরনীয় ক্ষতিকারক ভারতীয় হরমোন জাতীয় ওষুধ কালটার ব্যবহারের বিষয়ে একাধিক বাগান মালিকদের সাথে কথা হলে তারা এখনও ওই ঔষধটির নাম শোনেননি বলে জানান। এ ছাড়া এই দেবহাটার মাটিতে প্রতিবছর যে হারে আমের মুকুল ও ফলন হয়ে থাকে তাতে করে ওই হরমোনের কোন প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন না। দেবহাটা উপজেলা কৃষি বিভাগের সকল মাঠ কর্মকর্তাগণ, হাইজানিক পদ্ধতিতে প্রতিটি আম ব্যাগিং, বাগান পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রেখে ও পরিমিত পরিমান কীট নাশক স্প্রে করে আম চাষের জন্য বাগান মলিকদের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। সে মতে অনেক বাগান মালিক এখন থেকেই তাদের বাগানগুলো পরিস্কার পরিচ্ছনতাসহ কীটনাশক ব্যবহারের লক্ষ মাত্রা অনেকাংশে কমিয়ে দিয়েছেন। কোন কারণে আমের বাজারে দরপতন ঘটলে দেবহাটা উপজেলার আমচাষীগন অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। তাই তারা ও উপজেলাবাসী ব্যক্তিগত উদ্যোগ কিংবা সরকারীভাবে অচিরেই উপজেলায় একটি জুস জেলীর কারখানা বা একটি বৃহত্তম আম সংরক্ষণাগার/হিমাগার নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন। দেবহাটা সদরের আম ব্যবসায়ী ঝন্টু কুমার দে জানান, গতবছর করোনা ভাইরাস ও প্রাকৃতিক কারণে আমের ব্যবসায় ধ্বস নেমেছিল। এবছর চাষীরা অনেক আশা নিয়ে নব উদ্যমে আমের ফলনের উপর জোর দিয়েছে। সে হিসেবে মৌসুমের শুরুতে আম গাছগুলোর পরিচর্যাসহ সকল নিয়মকানুন মেনে চাষ করা হচ্ছিলো। কিন্তু আমের মুকুলের যে অবস্থা তাতে আশানুরূপ ফলন হবে বলে মনে হচ্ছে না বলে ঝন্টু দে জানিয়েছেন।