রংপুরের তারাগঞ্জে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে ঠাকুরগাঁওগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা দোকানের মধ্যে ঢুকে পরে। এই দুর্ঘটনায় হাজ্জাজ মিয়া (৪২) নামে একজন দিনমজুর নিহত হয়েছেন এবং বাসযাত্রী সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটনাটি ঘটে। নিহত হাজ্জাজ মিয়া একই উপজেলার ঝাকুয়াপাড়ার মৃত সহির উদ্দিনের ছেলে। সে সন্ধ্যায় বাজার করতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বাসটি থ্রি-হুইলারের সাথে ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি দোকানে ঢুকে গেলে এ দূর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুপ্ত জনতা প্রায় দুই ঘন্টা মহাসড়কের রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।খবর পেয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক আহম্মদ,হাইওয়ে থানার ওসি কেরামত আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক অবরোধকারীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত নয়টার পর বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক থেকে সরে গেলে নেয়া হলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর থেকে ছেড়ে আসা ঠাকুরগাঁওগামী এইচএপ্লাস পরিবহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি থ্রি-হুইলারকে ওভারটেক করতে গিয়ে ওই থ্রি-হুইলারকে ধাক্কা দেয়। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের একটি দোকানে ঢুকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন দিনমজুর পথচারী নিহত হন। বাসের যাত্রীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। আহতরা হলেন- লালমনিরহাট কালিগঞ্জের জামাল (৩৫), তারাগঞ্জ চৌপথি এলাকার ফুয়াদ (৮৪), হোসেন আলী (৪০), ফাতেমা (৩৫), একই উপজেলার বেলতলী এলাকার তমা (১৯), কেল্লাবাড়ী বালাপাড়ার তারা বানু (৫৫), ঘনিয়াপুরের বাবু (৪০), সৈয়দপুর ওয়াবদা মোড়ের সেকেন্দার (৩০)। এছাড়াও আরো দুই-তিন জনের তাৎক্ষণিক নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-বি) নূর ই জান্নাত সিফাত বলেন, ঘটনাস্থলে হাজ্জাজ নামে একজন মারা যান। আহত হয়েছেন ১০ জন। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগিতায় দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি উদ্ধার করা হয়।
ওই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা বলে জানান উপজেলা চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন। তিনি বলেন, সেখানে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুর্ঘটনা রোধে সড়ক বিভাজন (রোড ডিভাইডার) ও স্প্রীড ব্রেকার নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।