দিঘলিয়া এমএ মজিদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের ও উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পাশাপাশি কলেজটিতে উপাধ্যক্ষ নিয়োগেও অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ সকল অনিয়ম ও দুর্ণীতির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ স্বাক্ষী দুইজন হলেও কেউ সুস্পষ্ট সত্য কথা প্রকাশ করছেন না। চলছে দুইজনের দায় সারা প্রতিযোগিতা। কলেজের রক্ষিত অর্থ অবৈধ পন্থায় উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে শুনানো হচ্ছে নানা কল্প কাহিনী। যা শুনে বা দেখে সকলমহলের নিকটই প্রতিয়মান হয়েছে টাকা ব্যাংক থেকে তুলে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিজেরাই আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। যদিও নানা মহল বলছে উপাধ্যক্ষ অধ্যক্ষকে নানা ভাবে জিম্মি করে ওই টাকা কৌশলে উত্তোলন ও আত্মসাৎ করার কথা শুনা গেলেও ওই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। কলেজটি ডিগ্রী কলেজ হলেও অবৈধ টাকা উত্তোলনকে বৈধ করার নিমিত্তে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক যুগ পূর্বের বিধি উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, দিঘলিয়া এমএ মজিদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা নুরুজ্জামান ও উপাধ্যক্ষ খান মোঃ রওশন আলীসহ পরিচালনা পরিষদের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে কলেজের ব্যাংকে জমাকৃত টাকাসহ কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসহ পরিচালনা পরিষদের কতিপয় সদস্য দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুল আলমের নিকট ২০২০ সালের ২১ মার্চ অভিযোগ দায়ের করলে এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ করলে অভিযোগ তদন্তের জন্য দিঘলিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুর রহমানকে অভিযোগ তদন্তের জন্য পত্র দেন। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে দিঘলিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাধ্যমিক মোঃ মাহফুজুর রহমান উভয় পক্ষকে চিঠির মাধ্যমে অবগত করেন ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখে তদন্তের সামনে নিজ নিজ প্রমাণাদি নিয়ে হাজির থাকতে। সকল পক্ষের উপস্থিতিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর কলেজের অভিযোগের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেন তদন্তে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা। তদন্তে বেরিয়ে আসে কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের কলেজের এফডিআর করে ব্যাংকে জমা রাখা প্রায় ২০ লাখ টাকা নানা কুট কৌশলে তুলে আত্মসাৎ করেছেন বা চেষ্টা করেছেন। তদন্তের সময় টাকার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করায় জবাবে সন্তোষজনক জবাব আসেনি এমনই কথা জানা গেছে। কলেজের ১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তুলে কলেজের উন্নয়নের রেজুলেশন থাকলেও সে টাকায় কোন কাজ করা হয়নি। পরবর্তীতে কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পরিচালনা পরিষদের রূপরেখা পরিবর্তন করে ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা প্রায় ২২ লক্ষ টাকা ও মেহগুনি গাছ বিক্রি ২লক্ষ টাকার থেকে সোনালী ব্যাংক দিঘলিয়া শাখার কলেজের হিসাব নম্বরে ৫ লাখ টাকা জমা রাখা হয়েছে। বাকী টাকার ২ লাখ টাকা কলেজের মামলায় খরচ হয়েছে, ১০ লাখ টাকা খান নজরুল ইসলামের নিকট জমা আছে এবং প্রায় ৭লাখ টাকা কলেজের সাবেক সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে বলে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ তদন্ত কর্মকর্তার সামনে জানিয়েছেন, যার কোন সন্তোষজনক কাগজপত্র জমা দিতে পারেন নি বলে জানা গেছে। এদিকে কলেজের নিয়োগ পরীক্ষায় আলিয়া রওশন প্রথম ও খান মোঃ রওশন আলী দ্বিতীয় হলেও রওশন আলী ভুয়া কাগজপত্রে আলিয়া রওশনকে বাদ রেখে খান মোঃ রওশন আলী তার নিয়োগ বৈধ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আলেয়া রওশন মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া সত্বেও খান মোঃ রওশন আলী ভুয়া কাগজপত্রে প্রথম দেখিয়ে তিনি সিনিয়র সেজে কলেজের উপাধ্যক্ষ পদ দখল করেছেন যে পদে আসিন হবেন আলিয়া রওশন। খান মোঃ রওশন আলী কয়েকজন টিআরকে সাথে নিয়ে অধ্যক্ষ মীর্জা নুরুজ্জামানকে নানামুখী চাপে ফেলে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ ও নানা মুখী স্বার্থ হসিল করেছেন এমন অভিযোগ এলাকার মানুষের মুখে মুখে। এমনকি ওই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে উপেক্ষা করে নিজের ক্ষমতার গন্ডি তৈরি করে নানা অনিয়মের জন্ম দিয়েছেন এ কলেজটিতে বলে জানা গেছে। যা তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে। দিঘলিয়ার কৃতী সন্তান মরহুম দানবীর এমএ মজিদ। যার সম্পদ ও অর্থায়নে দিঘলিয়ায় একাধিক সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যিনি না হলে কলেজের জন্ম হতোনা, তার সন্তানদেরও উপেক্ষার চোখে দেখেন এই উপাধ্যক্ষ বলে জানা যায়। দিঘলিয়া এমএ মজিদ কলেজের নয় ছয় করা অর্থ উদ্ধার ও এ অনিয়ম এবং দুর্নীতির সাথে যাঁরা জড়িত তাঁদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী সর্ব মহলের।