বাংলাদেশ রেলওয়ের সার্ভিস প্রোভাইডার পরিবর্তনের কারণে গত সোমবার (২১ মার্চ) থেকে বন্ধ রয়েছে ট্রেনের অনলাইন টিকিট বিক্রি। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবারও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। টিকিটের জন্য ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। সশরীরে স্টেশনে সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় চাপ বেড়েছে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও।
আগামীকাল শুক্রবার (২৫ মার্চ) মধ্যরাত পর্যন্ত কাউন্টার থেকে হাতে লিখে পুরনো পদ্ধতিতে চলবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি। এরপর শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে পুনরায় অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। তবে শুরুতে শুধু ওয়েবসাইট থেকেই টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। থাকবে না কোনো মোবাইল অ্যাপ।
জানা গেছে, নতুন ওয়েবসাইট (www.eticket.railway.gov.bd) থেকে টিকিট সংগ্রহের জন্য প্রথমেই প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে করতে হবে নতুন অ্যাকাউন্ট। পুরোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়ে লগ-ইন যাবে না নতুন ওয়েবসাইটে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সহজ, সিনেসিস এবং ভিনসেন জেভি যৌথভাবে তৈরি করেছে টিকিটিং সিস্টেম। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। চলতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি টিকিটিং সিস্টেম পরিচালনার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ‘সহজ’র সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের।
বাস-লঞ্চের টিকিট বিক্রির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ১৫ বছর ধরে ব্যবহৃত রেল টিকিটিং সিস্টেমের আদলে একটি সমমানের পদ্ধতি মাত্র ২১ কর্মদিবসে তৈরি করেছে সহজ। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছে সহজ। টিকিটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সিস্টেম পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও প্রদান করেছে সহজ। এর আগে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব পালন করেছে সিএনএস নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
চুক্তি অনুযায়ী সহজ, সিনেসিস এবং ভিনসেন জেভি প্রাথমিকভাবে চলমান সিসিএসআরটিএস সিস্টেমটি সচল রাখবে। তবে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে সিসিএসআরটিএস সিস্টেমটি বিআরআইটিএস দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৯৪ সালে কম্পিউটার ভিত্তিক টিকিটিং সিস্টেম চালু করে। ২৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে টিকিট ইস্যু করা হতো। বর্তমানে ১০৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ৭৭টি স্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হচ্ছে। দৈনিক প্রায় ৯০ হাজার ও মাসিক প্রায় ২৭ লাখ যাত্রীর টিকিট কম্পিউটারের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়। এসব টিকিটের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১৩ লাখ টিকিট ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইস্যু করা হচ্ছে।