সুদি কারবারীর কাছ থেকে চার লাখ টাকা নিয়ে ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরেও সুদি কারবারীর দাবীকৃত পাঁচ লাখ টাকা না দেয়ায় ব্যবসায়ীর বসতঘরে গিয়ে গৃহবধুর শ্লীলতাহানীসহ দুই নারীকে মারধর ও মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়ার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তবে বাদীর অভিযোগের বিপরীতে থানার এক এসআই তার মত করে অভিযোগ লিখে স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি ধামাচাঁপা দিতে সুদি মহাজনের পক্ষালম্বন করে নির্যাতিতাদের পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের চাঁপা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নির্যাতিতা ওই হিন্দু পরিবারের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সোমবার সকালে জেলার গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর গ্রামের অজিত দাসের স্ত্রী নমিতা দাস অভিযোগ করে বলেন, গত পাঁচ বছর পূর্বে লক্ষণকাঠী গ্রামের সুদি কারবারি দাদন সরদারের কাছ থেকে ব্যবসার জন্য তার স্বামী চার লাখ টাকা সুদে আনেন। ওই চার লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। তারপরেও সুদি কারবারি দাদন সরদার তার স্বামীর কাছে আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবী করে আসছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সুদি কারবারি দাদনের দাবীকৃত পাঁচ লাখ টাকা উত্তোলনের জন্য লোকজন নিয়ে তাদের (নমিতা) বাড়িতে আসেন। এ সময় তার স্বামীকে বাসায় না পেয়ে সুদের টাকার জন্য অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে তার হাত ধরে টানা হেচরাসহ শ্লীলতাহানী ঘটিয়ে মারধর করে। একইসময় তার ৮০ বছর বয়সের শাশুরিকে মারধর করা হয়। এছাড়াও বাড়িতে বেড়াতে আসার তার বিবাহিতা মেয়েকে তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
নমিতা দাস আরও জানান, বিষয়টি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে গত শনিবার ঘটনাস্থলে আসেন বরিশাল র্যাব-৮ এর সদস্যরা এবং গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ। পরবর্তীতে ওইদিন রাতে তার স্বামীকে নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে যান। এ সময় তাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পূর্ন বিবরণ দেওয়া সত্বেও থানার এসআই নাসির হোসেন তার নিজের মতো করে অভিযোগ লিখে তার স্বামী (অজিত) দাসের কাছ থেকে স্বাক্ষর রেখে অভিযোগটি গ্রহন করেন।
অভিযোগ করে নমিতা দাস বলেন, রোববার সকালে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনার তদন্তে এসে সুদি কারবারির পাওনা টাকা পরিশোধ করে সুদি কারবারির সাথে মীমাংসা হওয়ার জন্য চাঁপ প্রয়োগ করেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার এসআই নাসির হোসেন বলেন, বাদীর কথিত মতে অভিযোগ গ্রহন করা হয়েছে। এরপরেও যদি অভিযোগ পছন্দ না হয় তাহলে আবার অভিযোগ গ্রহণ করা হবে।