দেশের আট জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে তীব্র শীত অনুভব হচ্ছে সারা দেশে। শীতের কারণে শিশু ও বয়স্করা খুব কষ্ট পাঁচ্ছে। সাথে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। ফলে হাসপাতাল গুলোয় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুন বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে চিকিৎসকরাও রয়েছেন বিপাকে। আবহাওয়াবিদদের মতে দু’ একদিনের মধ্যে এ শীত কাটবে না। তারা বলছেন, মৃদু শৈত্য প্রবাহের মধ্যেও দেশের তীব্র শীতের অনুভূতি বেশি হওয়ার মূলত: তিনটি কারণ হচ্ছে, প্রথমত: দেশে দিনরাতের তাপমাত্রার ব্যবধান ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম থাকছে। দ্বিতীয়ত: সাধারনত শীতকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশি থাকলে শীতল বাতাস বাধা পায়। চারদিন ধরে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমেছে। ফলে উত্তরাঞ্চল দিয়ে শুস্ক ও শীতল বাতাসের প্রবাহ বাড়ছে। তৃতীয়: দেশের নদণ্ডনদী ও গঙ্গা অববাহিকা দিয়ে আসা কুয়াশা মিলেমিশে একটা আস্তর তৈরি করেছে। যে কারণে সূর্যের আলো ভূমিতে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে সবনিম্ন তাপমাত্রা খুব বেশি না কমলেও শীতের অনুভূতি বেড়েছে।
প্রকৃতির খেয়ালকে নিয়ন্ত্রন করার সাধ্য কারো নেই। আমরা প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করছি আমাদের খেয়াল খুশি মতো। তাই প্রকৃত আমাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। গ্রীষ্মকালে অসহনীয় গরম। আর শীতকালে অসহ্য ঠাণ্ডা। নগর-মহানগর গুলোয় ভাসমান মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে শীতের কারণে। শীত থেকে বাঁচতে আগুন পোহাতে গিয়ে অনেকেই আগুনে পুড়েছেন। চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতাল গুলোয়। এছাড়াও গরম পানিতেও অনেকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পুড়িয়ে কষ্ট পাঁচ্ছেন। আর শিশু ও বয়স্করা ঠাণ্ডা জনিত নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস,অ্যাজমা, শ্বাস কষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে সারা দেশে ঠাণ্ডা জনিত কারণে বেশ কিছু শিশু-বৃদ্ধ মৃত্যুবরণ করেছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, শীত থেকে বাঁচতে ঘরে থাকতে হবে এবং গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
শীতের প্রকোপের কারণে গরম কাপড়ের বাজারে ভিড় বাড়ছে। সামর্থবানরা যাচ্ছেন বড় বড় শপিং-মলে বা বিপণী বিতানে। আর দরিদ্ররা ভিড় করছেন ফুটপাতের মার্কেটে। শীতবস্ত্র ক্রেতারা বলছেন, শীত বাড়ার সাথে সাথে দাম বেড়েছে শীত বস্ত্রের। আর ছিন্নমূল মানুষের ভরসা ব্যক্তিগত বা সাংগঠনিক ভাবে শীতবস্ত্র বিতরণে তাদের বিতরণকৃত শীতবস্ত্র দিয়ে শীত থেকে বাচার প্রাণান্তর চেষ্টা। এজন্য সামর্থ্যদের এগিয়ে আসতে হবে। গরীব ছিন্নমূল মানুষকে বাঁচাতে হবে। শীতার্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনে বিশেষ তহবিল গঠন করে তাদের শীত থেকে বাঁচাতে হবে। সেই সাথে পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মৃদু শৈত্য প্রবাহেই এমন অসহনীয় অবস্থা প্রবল শৈত্যপ্রবাহ এলে তো সবার মরা-বাঁচার সমস্যা দেখা দেবে।