যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কক্সবাজারে লবণ চাষে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। গভীর নলকূপ দিয়ে ভূগর্ভের পানি তুলে লবণ চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে। চাষিরা বলছেন, নতুন প্রযুক্তিতে লবণ চাষে সময় ও উৎপাদন খরচ দুটোই কমেছে। সঙ্গে বেড়েছে উৎপাদনও। লবণ উৎপাদনে মূল উৎস লবণাক্ত পানি। যা সাগর বা খাল থেকে লবণাক্ত পানি আটকিয়ে মাঠে সংরক্ষণ করা হয়। মাঠ প্রস্তুতের পর ২ থেকে ৩ ইঞ্চি লবণাক্ত পানি মাঠে প্রবেশ করিয়ে তা ৬ দিন রোদে শুকানোর পর উৎপাদিত হয় লবণ। প্রাচীণ কাল থেকেই চাষিরা লবণ চাষে এ সনাতনী পদ্ধতি ব্যবহার করে লবণ উৎপাদন করছেন। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় লবণ চাষে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। সাগর বা খাল থেকে নয়, এবার মাঠে বসানো হয়েছে সেচ পাম্প ও নলকূপ। যা থেকে খুবই সহজে লবণাক্ত পানি উত্তোলন করছেন চাষিরা। আর কম খরচে, অল্প সময়ের মধ্যে ভালো মানের বাড়তি লবণ উৎপাদিত হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের। তারা বলছেন, নতুন এই প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সহজেই ডিপের পানি পাওয়া যাচ্ছে। এতে সময় ও শ্রমিক কম লাগেছে। সঙ্গে বাড়ছে লবণ উৎপাদনও। এদিকে অনেক সময় খালে পানি শুকিয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় লবণ উৎপাদন। তবে এখন লবণ মাঠে সেচ পাম্প ও নলকূপ বসিয়ে চাহিদার চেয়েও বেশি লবণ উৎপাদিত হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এ ছাড়া আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনের জন্য চাষিদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়ার দাবি জানান তিনি। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আল আজাদ বলেন, জেলার সব কৃষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা গেলে, আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ চাষাবাদ বাড়বে।আর বিসিক কর্মকর্তার দাবি আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ চাষে উৎপাদন খরচ কমে আসার পাশাপাশি অধিক লবণ উৎপাদন হচ্ছে। কক্সবাজার বিসিকের লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, প্রচলিত পদ্ধতির সঙ্গে কিছু নতুন কৌশল যোগ করে চাষাবাদ করে ১০ শতাংশ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। এজন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে কক্সবাজারে ৬৬ হাজার একর জমিতে লবণের চাষ হচ্ছে। যার মধ্যে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় চাষ হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার একর জমিতে।