দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ধানের বাম্পার ফলনের পরও কাংখিতমূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকরা। হাট-বাজারে ধানের দাম কম থাকায় প্রতিমণ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়। তাই ভালো ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মনে।
উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, সোনালি ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকরা। কেউ আঁটি বেঁধে ধানের বোঝা কাঁধে করে, কেউ ভ্যানে কেউ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে আবার কেউ রাস্তার উপড় খোলা মাঠে ধান-খড় শুকাতে ব্যস্তসময় পার করছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৯ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়। তবে চাষ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী। উপজেলা নতুন জাতের জিরাশাইল,৯০ জিরা ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, উফসি-২৯ ও ব্রি-২৮,ব্রি ২৯ জাতের ধান বেশি চাষ হয়েছে।
নান্দেড়াই গ্রামের কৃষক মহসিন আলী বলেন,এবার ৪ বিঘা জমিতে বোরো জাতের বিভিন্ন ধান লাগিয়েছি।এ র মধ্যে ২৮ ,৯০ জিরা লাগিয়েছি।এর মধ্য ২৮ ধান বিক্রি করেছি ১৯০০ টাকা বস্তা দরে মাত্র ৯৫০ টাকা মন। এবার তো সব কিছুর দাম বেশি গতবছর এক বিঘা জমিতে পানির দর ছিলো দুই হাজার এবার তিন হাজার। এক বস্তা ডেব সার ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা ছিলো এবার ১২০০ টাকা। এক বিঘা জমির ধান কাটতে লাগছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। সব জিনিসের দাম বেশি হয় কিন্তু ধানের দাম বাড়ে না। তাহলে বলেন কিভাবে ধান আবাদ করে লাভবান হবো আমরা। ধান আবাদ করতে হয় পেটের দায়ে, কারণ বাড়ির ভাত গরুর খাবার এতটুকুর জন্য আমাদের কত কষ্ট হয়।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরকার বেশি দাম দিয়ে ধান কেনা শুরু করছে, কিন্তু কয়জন কৃষক সরকারকে ধান দিতে পারবে ? আমরা কৃষকদের উচ্চ ফলন জাতের নতুন ধান লাগানোর পারমর্শ দিচ্ছি, যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারে। চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের ১৯ হাজর ৬২৫ হেক্টর জমিতে এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এবার ধান কাটা শ্রমিকের সংকট নেই। হারভেস্টার দিয়ে কৃষকরা ধান কাটছে। আগামী দুই তিন সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা মাড়াই শেষ করতে পারবে কৃষকরা।