আর মাত্র বাকি দুই দিন। এতদিন নিস্তেজ থাকলে শেষ মূহুর্তে এখন জমে ওঠেছে সরাইলের পশুর হাঁট। গত দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা শুধু আসা-যাওয়া করেছেন। বিক্রয় ছিল খুবই নগণ্য। অধিকাংশ ক্রেতাদের ঘুরতে দেখা গেছে গরূর মালিকদের বাড়িতে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কিছুটা চাঙ্গা এখানকার পশুর হাঁট। কিছু ক্রেতা ছুটে চলেছেন খামার গুলোতে। তবে গত সোমবার থেকে পুরোদমে জমে ওঠেছে এখানকার বাজার গুলো। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এখনো ভাবছেন অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা।
সরজমিন অনুসন্ধান, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার দপ্তর ও ক্রেতা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা ষাড় মোটাতাজা করণের তালিকাভুক্ত ৯৬৬ টি খামারে ষাড় রয়েছে ২০ হাজার ২৭৩ টি। সমগ্র উপজেলায় তালিকাভুক্ত গবাদি পশুর সংখ্যা ৩৬ হাজার ২৭৩ টি। এ বছর কোরবাণীর পশুর চাহিদা হচ্ছে ৩১ হাজার ৫৩০ টি। চাহিদার তুলনায় সরাইলে পশু বেশী আছে ৪৭৪৩ টি। তারপরও এবার কোরবাণীর পশুর দাম গত বছরের চেয়ে অনেক বেশী। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কারণ ন্যুনতম সাইজের একটি গরূর মূল্য এক লাখ টাকা। তাই অন্যান্য বৎসর ঈদের দুই/তিন সপ্তাহ আগে থেকেই সরাইলে চাঙ্গা থাকে পশুর হাঁট। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। হাঁটে শুধু গরূ মহিষ আসছে। বাজার শেষে চলে গেছে। বিক্রেতারা বাজার চড়া ভেবে মূল্য হাকিয়েছেন আকাশচুম্বি। আর ক্রেতারা ভাবছেন শেষের দিকে মূল্য কমবে। উভয়ের ভাবার মধ্যেই বাজার শেষ। আরেক শ্রেণির ক্রেতাদের পশুর মালিকদের বাড়িতে গিয়ে মূল্য হাঁকাতে দেখা গেছে। কেউ কেউ ঘুরছেন খামারে। সব চিন্তা ও শঙ্কা কাটিয়ে গত সোমবার থেকে দারূন ভাবে জমে ওঠেছে সরাইলের পশুর হাঁট গুলো। বাড়ছে ক্রয় বিক্রয়। দাম খুব একটা কম নয়। তবে প্রথম দিকের সেই আকাশচুম্বি দাম থেকে কিছুটা সরে এসেছেন বিক্রেতারা। এখনো এক শ্রেণির ক্রেতা-বিক্রেতাকে ভাবতে দেখা গেছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর সূত্র জানায়, সরাইল উপজেলায় ৮টি পশুর হাঁট রয়েছে। এর মধ্যে সরাইল সদর ও জয়ধরকন্দি হচ্ছে স্থায়ী হাঁট। আর অস্থায়ী হাঁট গুলো হচ্ছে-শাহবাজপুর, বেড়তলা, দুবাজাইল সমবায়, দেওবাড়িয়া ও পাকশিমুল হাঁট। এর বাহিরেও অনুমতি বিহীন কালীকচ্ছ বাজারে প্রতিদিন সকালে বিকাল ও রাতে পশু ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। মাঝে মধ্যে চুন্টা ঈদগাহ মাঠেও বসছে পশুর হাঁট। সরাইল বাজারের ক্রেতা আবদুল আজিজ বলেন, আসলে বাজারে অনেক পশু দেখে দাম যাচাই করে পশু ক্রয় করা ভাল। তবে ট্যাবলেট বা ইনজেকশন পুশ করা কিনা? সেটা ভাবনার বিষয়। তারপরও লাল রং এর একটি ষাড় ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: শ্যামল কুমার চৌধুরী বলেন, এবার সরাইলে চাহিদার তুলনায় সাড়ে চার হাজার পশু অতিরিক্ত আছে। কোরবাণীর পশুর কোন সমস্যা হবে না। ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই পশুর শাররীক সুস্থ্যতা নিরীক্ষার জন্য আসেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন, অনুমোদিত ৮টি হাঁট ভালভাবেই চলছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বক্ষণ নজরদারি করছেন। আমরাও অনুমোদন বিহীন বাজার গুলোতে অভিযান পরিচালনা করছি।