চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের পুরোনো সমস্যা। এই জলাবদ্ধতা বর্ষাকালে জীবনমরণ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে শহরের অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মানুষের চলাচল থমকে গেছে। বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার এই সমস্যা থাকলেও এ থেকে মুক্তি মিলছে না। একটু বৃষ্টি হলে তলিয়ে যায় চট্টগ্রাম শহরের অনেক জায়গা, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় প্রায় নগরজুড়ে। এ সমস্যা নিরসন না হওয়ার জন্য একসময় অর্থ বরাদ্দকে অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা হতো। কিন্তু এখন সে সমস্যা নেই। বিপুল টাকা খরচ হলেও নগরবাসী সুফল পাঁচ্ছেন না। এ অবস্থায় সিটি করপোরেশন ও সিডিএ পরস্পরকে দায়ী করছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ৬-১০ বছর আগে নেয়া হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার চার প্রকল্প। তবে কাজের ধীরগতি ও দীর্ঘসূত্রতায় কোনো সুফলই পায়নি চট্টগ্রামবাসী। উল্টো সেই ব্যয় বেড়ে ১৪ হাজার ২৬৩ কোটি টাকায় উঠেছে। পাশাপাশি আগে যেখানে বৃষ্টি হলে জমত হাঁটুজল, এখন কোমর; কোথাও কোথাও আবার জমছে বুকসমান পানি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সংস্থা দুটির মধ্যে সমন্বয় না থাকায় একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়েও জটিলতায় পড়েছে বাস্তবায়নকারী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এবং অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষ পড়ছে বিপাকে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও মানুষের স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্যও থমকে রয়েছে কয়েকদিন ধরে। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে সিডিএ। তবে এ প্রকল্পের অধীনে নগরীর প্রধান প্রধান বেশ কয়েকটি সড়ক উঁচু করা হলেও অলিগলিসহ বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় সংকট এখন চরমে। ফলে এর খেসারত দিচ্ছেন নগরবাসীকে। তাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে তদারকির দায়িত্ব নিতে আহ্বান করছি। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন, সিডিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ কাজে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। যেন প্রকল্পগুলোর ত্রুটি ও অসম্পূর্ণতা চিহ্নিত করে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা যায়।