আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রায় সাড়ে ৩ মাস বাকী। নীলফামারী-৪, সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ আসন। এ আসনটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি থেকে অতিতে সাংসদ ছিল। তবে বেশির ভাগ সময়ে ছিল জাতীয় পার্টির দখলে। বর্তমানেও এ আসনের সাংসদ জাতীয় পার্টির আহসান আদেলুর রহমান আদেল। বর্তমানে এ আসনে ভোটারদের মুখে মুখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা বিরাজমান। এ আসনে আ.লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক কর্মকা- অব্যাহত থাকলেও নির্বাচন কেন্দ্রিক তৎপরতা শুরু করেছেন শুধু মাত্র আ.লীগের প্রার্থীরা। এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত না আসায় প্রচারে মাঠে না থাকলেও কৌশলে বিএনপি সংগঠিত করছে নেতাকর্মীদের। অপরপাশে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনীতির বিভক্তি সিদ্ধান্তহীনতায় ফেলেছে স্থানীয় নেতৃত্বে। ফলে এখনো তারা আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী তৎপরতা থেকে দূরে রয়েছে। তাছাড়া জাপার রওশন এরশাদ ও বিদিশা পন্থী নেতারাও পোস্টারিং করছেন নির্বাচনী। নির্বাচনী বিষয় নিয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীর সাথে। এ থেকে জানা যায়, শুধু সৈয়দপুরে আ''লীগেরই মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন একাধিক নেতা। তারা হলেন সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন। তিনি একজন শহীদ পরিবারের সন্তান। সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সিনিয়র নেতা। তাঁর বাবা শহীদ ডাঃ শামসুল হক। ১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে নৃসংসভাবে খুন হন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সৈয়দপুর থানা শাখার সহসভাপতি ছিলেন। তিনি সৈয়দপুরের একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক ছিলেন। তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সৈয়দপুরে একটি প্রধান সড়কের নামকরণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নাম ফলক আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে তাঁর ম্যুরাল আছে। মিডফোর্ট মেডিকেল কলেজে তাঁর নাম ফলক আছে। তাঁর পরিবারের সকল সদস্য স্বাধীনতার পুর্ব হতে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন এর জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ অক্টোবর। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. কম. অনার্স এম. কম. ব্যবস্থাপনা পাশ করেন। ১৯৭৭ সালে ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি ও রাকসুতে এ জি এস পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। ১৯৯১ সাল হতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নীলফামারী জেলা কমিটির যুগ্ন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন ও বর্তমানে সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য। ২০০৮ সালে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী। ২০১৫ সালে সৈয়দপুর পৌর মেয়র পদে দলীয়ভাবে নৌকা মার্কা প্রতিকে মনোনয়ন পেয়ে স্বল্প ভোটে পরাজিত হন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ বিষয়ে দলের সকল প্রকার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন। তিনি শ্রমিকলীগ থেকে আজ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনিও পুরোদমে মাঠে কাজ শুরু করেছেন। সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন,তিনিও শহীদ পরিবারের সন্তান। এবারের নির্বাচনে তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রাশেদুজ্জামান রাশেদ। তাঁর বাবা ছিলেন দেশের প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য। তিনি সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা। ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার মা বর্তমান সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ। সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোশাররফ হোসেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য। তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ আসনে নির্বাচনী ইতিহাস থেকে জানা যায়,দেশ স্বাধীনের পর প্রথম পার্লামেন্ট মেম্বার ছিলেন মরহুম আলীম উদ্দিন ( আওয়ামীলীগ)। মরহুম অধ্যাপক আবদুল হাফিজ ( ন্যাপ) পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান। মরহুম এ এ এম কর্নেল মারুফ সাকলান ( আওয়ামীলীগ)। মরহুম মজিবর রহমান ( বিএনপি)। মরহুম আমজাদ হোসেন সরকার ( বিএনপি)। মরহুম আসাদুর রহমান জাতীয় পার্টি,মরহুম রওশন আলী দুলু মিয়া জাতীয় পার্টি কাজী ফারুক কাদের জাতীয় পার্টি, শওকত চৌধুরী জাতীয় পার্টি ও বর্তমান সাংসদ আহসান আদেলুর রহমান আদেল জাতীয় পার্টি। এ আসনে বেশীর ভাগ সময় জাতীয় পার্টির সাংসদ নির্বাচিত হন।