ওয়ারিশ সম্পদ তথা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পারিবারিক সম্পদ সবাই বণ্টননামা দলিলের মাধ্যমে নিবন্ধসহ নামজারি করলে দেশে ভূমিবিষয়ক মামলা অনেক কমে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। আজ বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপি’র মাসিক (অক্টোবর পর্যন্ত) পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ভূমি সচিব খলিলুর রহমান, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুস সবুর মণ্ডলসহ মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত দপ্তর বা সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে ভাই-ভাই কিংবা ভাই-বোনসহ বেশিরভাগ পারিবারের মধ্যে বিরোধের অন্যতম কারণ- নিবন্ধনকৃত বণ্টননামা দলিল ছাড়া মৌখিকভাবে, কিংবা সাধারণ কাগজে লিখে আপসে সম্পত্তি বণ্টন বা ভাগ করা। পরবর্তী সময়ে সম্পদের মূল্যবৃদ্ধি, কিংবা নানা স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কারণে পারিবারিক আপোশ ভেঙে যায়। জন্ম নেয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বিরোধ। রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামার ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী। এ ছাড়া পারিবারিক সম্পদ বণ্টনে বোনের অধিকার রক্ষার বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার ব্যাপারেও তিনি গুরত্বারোপ করেন। প্রসঙ্গত, একাধিক ওয়ারিশ বা একাধিক ক্রেতার যার যার প্রাপ্য অংশ অনুযায়ী, জমি নিজ নিজ নামে আলাদাভাবে সুনির্দিষ্ট করে দলিলে উল্লেখসহ লিখিত দলিল সম্পাদন করলে, তাকে বণ্টননামা তথা বাটোয়রা দলিল বলে। বণ্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রি করে নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে নামজারি করতে হয়। বাটোয়ারা দলিল ওয়ারিশান সম্পত্তি বণ্টনের মৌলিক প্রমাণ। বণ্টননামা দলিলের পর ওয়ারিশান সম্পত্তির নামজারি করাও গুরুত্বপূর্ণ। রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা দলিল করে নামজারি করা না থাকলেও ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। এ ছাড়া সভায় জানানো হয়, ২০২৫ সালের পর ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন সংক্রান্ত সব সেবা কার্যক্রমকে প্রকল্প মেয়াদের শেষে বুঝে নেওয়া, ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মনিটরিং এবং রক্ষণাবেক্ষণ করার উদ্দেশ্যে অনলাইন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এই কার্যক্রমের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। এই কার্যক্রম অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘সমন্বিত বাজেট ও হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি’ আইবাস এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা’ জেমস কার্যক্রমের অনুরূপ। অ্যালামস কার্যক্রম পুরোদমে চালু হলে দক্ষতার সঙ্গে ভূমি ব্যবস্থাপনায় তথ্য বা উপাত্ত ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা, ডিজিটাল সার্ভিস বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিজিটাল পদ্ধতি, আইন, বিধি, নীতি ও ম্যানুয়াল হালনাগাদ করে সময়োপযোগী করা, ডিজিটাল ভূমিসেবা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে জনগণকে উদবুদ্ধ করা এবং স্মার্ট ভূমিসেবা সম্পর্কে নাগরিকের জিজ্ঞাসার উপযুক্ত সমাধান প্রদান করা সম্ভব হবে।