বাঘায় বন্যায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৬ পরিবার পানিবন্দী

এফএনএস (আমানুল হক আমান; বাঘা, রাজশাহী) : | প্রকাশ: ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:২৯ পিএম
বাঘায় বন্যায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৬ পরিবার পানিবন্দী

রাজশাহীর বাঘায় বন্যায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৬টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহ যাবত তারা পানির সাথে যুদ্ধ করে বসবাস করছেন। গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর নিচপলাশি আশ্রয়ন প্রকল্পের গুচ্ছ গ্রামে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

শুক্রবার (১৫ আগষ্ট) সকাল ১০টার দিকে সাংবাদিক এসেছেন শুনে তাৎক্ষনিক ২৪ নম্বর ঘরে বসবাসকারী ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ এগিয়ে আসেন। এরপর ২৫ নম্বর ঘরের শাহিদা বেগম, ১৫ নম্বর ঘরের সান্টু আলী, ৩৩ নম্বর ঘরের মালেকা বেগম, ৩০ নম্বর ঘরের রাশিদা বেগম, ৪১ নম্বর ঘরের পাতা বেগম এগিয়ে এসে বলেন, বাবারে আমরা এখানকার সবাই এক সপ্তাহ থেকে পানির মধ্যে বসবাস করছি। কেউ কোন সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেনি। পানির সাথে যুদ্ধ করে বসবাস করছি।

একুটু এগিয়ে যেতে ৭০ বছরের মনোয়ারা বেগম নামের এক বৃদ্ধা বারান্দার উপর চেয়ারে বসে আছেন। এ সময় তিনি বলেন, আমার স্বামী ইয়াছিন আলী ৬ মাস আগে স্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আমার ২ মেয়ে ও ৪ ছেলে রয়েছে। সবাইকে বিয়ে দিয়েছি। ছেলেরা আছে তারা দেখাশুনা করে। কিন্তু সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি।

মনোয়ারা বেগম বলেন, কয়েক দিন আগে পাশে একটি সাপ দেখতে পেয়ে ভয়ে সবাই আতংক হয়ে যায়। সাপ পোকা মাকড়ের ভয়ে রাতে ঘুম হয় না।  

এ দিকে ৩৪ নম্বর ঘরের মালিক জমসেদ আলী, ৩৩ নম্বর বাড়ির মালিক আবদুল মজিদ, ৩৪ নম্বর বাড়ির মালিক জমসেদ আলী, ৩৯ নম্বর বাড়ির মালিক সিমা বেগম, ৪৫ নম্বর বাড়ির মালিক রুবিনা বেগম, ৪৪ নম্বর বাড়ির মালিক রুমা খাতুন, ৪৮ নম্বর বাড়ির মালিক রেহেনা খাতুন, ৪৩ নম্বর বাড়ির মালিক আশা খাতুন, ৪০ নম্বর বাড়ির মালিক চম্পা খাতুন এ গিয়ে এসে বলেন, ঘরে চাল আছে, কিন্তু রান্না করার জায়গা পানিতে ডুবে যাওয়ার কারনে খাওয়া দাওয়া প্রায় বন্ধের হয়ে আছে। শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হলে কষ্ট লাঘব হতো।

 জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে খানপুর নিচপলাশি আশ্রয়ন প্রকল্প প্রতিটি ঘরের জন্য দুই লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে আধাপাকা ঘর নির্মান করে দেন সরকার। সরকার আনুষ্টানিকভাবে আমাদের হাতে দলিল তুলে দেওয়া হয়। থাকার কোন জায়গা না থাকায় এই ঘরে তারা বসবাস করে। দীর্ঘ ১৫-১৬ বছরে এরমধ্যে এখানে কোন পানি উঠেনি। এবার হটাৎ করে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে উঠান দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তারা খুব কষ্টে আছেন। এখানে যারা বসবাস করেন তারা সবাই গরীব মানুষ। অনেক সময় তারা এলাকার বাইরে কাজ করে ও সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে সংসার চালায়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পে যারা বসবাস করেন তারা খুব দরীদ্র মানুষ। তারা দিন আনে দিন খায়। তারা সকালে কাজে বের হয়, আর সন্ধ্যায় বাড়ি আসেন। সারাদিন তারা বাইরে থাকেন। এলাকার কিছু মানুষ আমাকেও বলেছেন আশ্রয়ন প্রকল্পের গুচ্ছ গ্রামে বন্যায় পানি উঠেছে। বানভাষিদের সহযোগিতা শুরু করা হয়েছে। এদেরকেও সহযোগিতা করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে