তানোরে শিশু সাজিদ ট্রাজেডি

যারা গর্ত খুড়েছে তাদের অবহেলায় সন্তান হারালাম, প্রশাসনের কাছে বিচার চাই

মো: ইমরান হোসাইন; তানোর, রাজশাহী | প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
যারা গর্ত খুড়েছে তাদের অবহেলায় সন্তান হারালাম, প্রশাসনের কাছে বিচার চাই
পরিত্যক্ত অগভীর নলকূপের গর্তে পড়ে মৃত্যু হয় দুই বছরের শিশু সাজিদের। পরে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ থেকে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় সাজিদের মরদেহ। নিহত শিশু সাজিদকে গভীর নলকূপের ৪২ ফুট মাটি খনন করে ৩৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। সাজিদের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে কথা হয় তার বাবা রাকিব উদ্দীনের সঙ্গে। এসময় তিনি বলেন, বাড়ির পাশে যারা গর্ত খুড়েছে তাদের দোষ বা অবহেলায় আমি সন্তান হারালাম। প্রশাসনের কাছে বিচার চাই সঠিক যেটা, সেটা আমাকে পাইয়ে দেবেন। আমি ফুটফুটে একটা সন্তান হারিয়েছি। আমি গরীব আমার কিছু করণীয় নাই। কিন্তু গর্ত খুড়ে অবহেলায় বন্ধ না করা উচিত হয়নি। তাদের এ অবহেলার জন্য আমার সন্তান হারালাম। পাশের গ্রাম থেকে উদ্ধার তৎপরতা দেখতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, যারা হাউজিং (গর্ত) করেছে, এটা ভরাট করা তাদেরই কাজ। অথচ বছর ধরে ফেলে রেখেছে। পাইপের মুখে তারা অন্য কিছু দিত, একটা বস্তু দিত বা পাইপের মুখ বেঁধে রাখত বা তারা যদি একটা নিশানা দিত। তারা কিচ্ছুই দেয়নি। গর্ত করে ফেলে রেখেছে। এ অবহেলার জন্য সন্তান হারালো বাবা-মা আমি প্রশাসনিকভাবে বিচার চাই। নিহত শিশু সাজিদের মা রুনা বেগম বলেন, যে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছিল সেটি পাশের গ্রামের ওছির আলী নামে এক ব্যক্তি অনুমোদন ছাড়াই নিজ উদ্যোগে খনন করেছিলেন। পরে সেটিতে পানি না ওঠায় পরিত্যক্ত হয়। তবে সেই গর্ত তিনি ভরাট করেননি। ওছির আলীর অবহেলার কারণে আমি সন্তান হারালাম। আমি তার বিচার চাই ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। স্থানীয়রা বলছেন, অনুমোদনহীন ব্যক্তি মালিকানার এসব নলকূপ যত্রতত্র স্থাপন করার কারণেই আজ শিশু সাজিদকে এভাবে হয়তো চলে যেতে হচ্ছে। আর মায়ের চোখের সামনে নিজের নাড়িছেঁড়া ধন নিমিষেই এভাবে পাতালে চলে যাওয়ার বিষয়টিও শিশু সাজিদের মা রুনা বেগমসহ এলাকাবাসী কেউ যেন পারছেন না মেনে নিতে। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ শহীদুজ্জামান বলেন, শিশু সাজিদ ট্রাজেডির ঘটনা মার্মান্তিক। কেউ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাঈমা খান বলেন, শিশু সাজিদ ট্রাজেডি আমরা সারাক্ষণ মনিটরিং করেছি। নিহত সাজিদের বাড়ি গিয়ে নগদ অর্থ ও শুকনা খাবার এবং কম্বল দিয়ে তার বাবা ও মায়ের সাথে কথা বলে সান্তনা দিয়েছেন। এছাড়াও কোন সমস্যা হলে আইনি ভাবে সহযোগীতার আশ্বাস দেয়া হবে বলে জানান ইউএনও। ই/তা
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে