বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ৭ সতাংশ কর দিয়ে দেশে ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও এ পর্যন্ত এক টাকাও আনা হয়নি। নীতিনির্ধারকরা মনে করেছিলেন যে, এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করা হবে অনেকেই টাকা দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য মতে চলতি অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে কেউই এই সুযোগ কাজে লাগাননি। ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতি সংস্থ গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৬৪ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বড় আলোচনার বিষয় ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের সম্পদ বৃদ্ধি ও দেশের টাকা পাচার হওয়া। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার হয়েছে। আর এ কারণেই তা ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেক দেশ এমন উদ্যোগ নিয়ে সফলও হয়েছে। এসব অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে বাধা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ গত ৮ আগস্ট সব ব্যাংকের প্রধান নির্বহীদের চিঠি লিখে জানায়, বাংলাদেশের বাইরে যেকোনোরূপে গচ্ছিত ও অপ্রদর্শিত অর্থ ৭ শতাং কর দিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধভাবে দেশে এনে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করা যাবে। বিদেশ থেকে সেই অর্থ দেশে আসবে যেহেতু ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সেহেতু কোথাও প্রশ্ন করার সুযোগ নেই যে, সেই অর্থ বিদেশে বৈধ নাকি অবৈধভাবে গচ্ছিত ছিল। কিন্তু বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ ফিরিয়ে আনতে হলে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। এতে অনেকেই টাকা ফিরিয়ে আনাতে উৎসাহী হন না।
দেশে টাকা ফিরিয়ে আনতে হলে আন্তর্জাতিক আইন আছে। চাইলেই সরকার টাকা ফেরত আনতে পারবে না। আইন মেনেই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে পাচারের অর্থ ফেরত আনতে হবে। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুর থেকে আইন মেনেই পাচারের অর্থ ফেরত আনার দৃষ্টান্ত আছে। আমরা আশা করি আন্তর্জাতিক আইন মেনেই সরকার খুব দ্রুত পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে এবং সেই সাথে দেশের অর্থ যাতে পাচার না হতে পারে সেই দিকে কড়া নজর দেবে।