পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) থেকে। গত দুই বছরের মতো ঈদযাত্রায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) এর নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নেয়া হবে। তালিকার বাইরে বাড়তি ভাড়া নেয়া যাবে না। বাস মালিকদের সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ এ তথ্য জানিয়েছেন। বাস মালিকরাই আগামী ৭ এপ্রিল থেকে একযোগে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেয়া শুরু করবেন। ওই দিন সকাল থেকেই সংশ্লিষ্ট বাসের কাউন্টারে টিকিট পাবেন যাত্রীরা। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের অগ্রিম টিকিট দেয়া হবে। টিকিট কালোবাজারি রোধের বিষয়ে কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।রাকেশ ঘোষ বলেন, ‘যাত্রীরা যাতে বাসের অগ্রিম টিকিট সুশৃঙ্খলভাবে কাউন্টার থেকে কিনতে পারেন, সেজন্য বাস মালিকদের পক্ষ থেকে মনিটরিং টিম কাজ করবে। তবে বাসের কোনো টিকিট কালোবাজারি হবে না। কারণ বাস মালিকদের মনিটরিং টিমের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনও কাজ করবে।
এ বছর প্রশাসনের গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমেও টিকিট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানি রোধ করা হবে।’ ভাড়ার তালিকার বাইরে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না। সব বাস মালিককে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সামনে অপেক্ষা করছে ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মানে এক মাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দের দিন, প্রিয়জন ও আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে মিলনের দিন, ফুর্তির দিন বিশেষ করে নিজ বাড়ি থেকে কার্যপদেশে যারা অন্যত্র অবস্থান করছেন, তাদের এটি আলাদা এক গুরুত্ব নিয়ে আসে। কিন্তু এই আনন্দটুকু পাওয়ার আশায় মানুষকে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, যা প্রতি বছরের একটি সাধারণ চিত্র। প্রতি বছর শিক্ষা, কর্মসংস্থান কিংবা ভাগ্যবদলের তাড়নায় ঢাকাসহ বড় বড় শহরে মানুষের স্রােতে যখন একসঙ্গে রাজধানীসহ বড় শহরগুলো ছাড়ে, তখনই বিড়ম্বনার সূত্রপাত হয়। বাড়ি ফেরাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় মানবিক বিপর্যয়ের। বিপুলসংখ্যক মানুষের চাপ নিতে পারে না আমাদের সড়ক-মহাসড়কগুলো। ট্রেন কিংবা লঞ্চ কোনো ক্ষেত্রেই এই দুর্ভোগের নিস্তার নেই। ট্রেনে কিংবা লঞ্চে ধারণক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে চলাচলে প্রায়ই সৃষ্টি হয় দুর্ঘটনার। এ ক্ষেত্রে দ্রুত ও আন্তরিকভাবে নেওয়া কিছুকিছু পদক্ষেপ দুর্ঘটনাগুলোকে অনেকটাই এড়াতে পারে।
ঈদের সময় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। রাস্তাগুলোকে নির্বিষœ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংক্ষিপ্ত একটি প্রশিক্ষণ দিয়ে রাস্তায় নামালে এবং তারা একটু তৎপর হলে এসব কারণে সৃষ্ট যানজটের বড় অংশই কমানো সম্ভব হবে। প্রতি জেলা পুলিশকে তার নিজ নিজ জেলার রাস্তায় যাতে কোনো ধরনের যানজট না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দিলে অনেকটাই কাজ হয়। রাস্তার সম্ভাব্য ভোগান্তি এড়াতে চাকরিজীবী মানুষ পরিবার-পরিজনদের বাড়ি রেখে আসতে শুরু করবে। যতই দিন যাবে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। শুরুর দিন চাহিদা কম থাকতে পারে তবে আস্তে আস্তে সড়কপথেও যাত্রীদের ভিড় বাড়বে। ঈদ উপলক্ষে সদরঘাটের লঞ্চগুলোতে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে। ঈদের উপচে পড়া ভিড়ের সাথে সাথে যানজট, মানুষের ভিড় ইত্যাদি কারণে চোর, পকেটমার, ছিনতাইকারী, মলম পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যায় এবং তারা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা এলাকায় এলাকায় চাঁদার হাট বসায়, যানজটের এবং বাড়িফেরা মানুষের ভোগান্তি এগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এবং সিনসিয়ারলি পদক্ষেপ নিলে অনেকটাই এগুলো এড়ানো সম্ভব।