চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কর্ভাডভ্যান ও প্রাইমমুভার প্রবেশে বাড়তি মাশুল আরোপের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।
বর্ধিত মাশুলের প্রতিবাদে ট্রাক, কর্ভাডভ্যান ও প্রাইমমুভার মালিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার পর জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যানবাহন প্রবেশের মাশুল পূর্বের হারেই বহাল থাকবে।
বৈঠকের পর বন্দর সচিব বলেন, “দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বন্দরে যানবাহন প্রবেশের মাশুল যেটা বৃদ্ধি করা হয়েছিল, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সেটা স্থগিত থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে কারণে দ্রুত বন্দর কার্যক্রম চালু রাখা জরুরি।”
বৈঠকে শ্রমিক ও মালিক পক্ষও কাজে ফেরার আশ্বাস দেন। বন্দর সচিব জানান, “বৈঠকে সিদ্ধান্তের পরপরই মালিক–শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সবাইকে কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। বন্দরের বাইরে অপেক্ষমাণ প্রায় ছয় হাজার ট্রাক, কর্ভাডভ্যান ও প্রাইমমুভার এখন কাজে ফিরছে।”
এর আগে ১৫ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর নতুন ট্যারিফ কার্যকর করে। এতে বিভিন্ন সেবার মাশুল গড়ে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে, আর যানবাহন প্রবেশ মাশুল ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে শনিবার থেকে ট্রাক, কর্ভাডভ্যান ও প্রাইমমুভার মালিকেরা বন্দর এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখেন।
এদিকে চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও বর্ধিত মাশুলের প্রতিবাদে রোববার চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করে। এতে বন্দর অভ্যন্তরে কনটেইনার পরিবহন ও পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। সংকট নিরসনে দুপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষের বৈঠক ডাকা হয় এবং শেষ পর্যন্ত মাশুল স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ কর্ভাডভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, “বৈঠকে বর্ধিত প্রবেশ ফি স্থগিত করার কথা জানানো হয়েছে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সবাইকে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছি।”
বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর সন্ধ্যা থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন গেট দিয়ে ট্রাক, প্রাইমমুভার ও কর্ভাডভ্যান প্রবেশ শুরু হয়, ফলে বন্দর কার্যক্রমে স্বস্তির আভাস ফিরে আসে।