 |
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর কাজ পরিদর্শ ও বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করতে আসছেন রোববার। ঘর্ণিঝড় তিতলির কারণে এ সফর শনিবারের পরিবর্তে রোববার পূন:নির্ধারণ করা হয়।এর আগে ২০১৫ সাল ১২ ডিসেম্ভর সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী মাওয়াূয় এসেছিলেন। সংশ্লিষ্টদের তথ্যানুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার বেলা ১১ টায় মাওয়া দোগাছিয়ায় পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ এর মাঠে হেলিকপ্টার যোগে এসে অবতরণ করবেন। এরপর গাড়ি যোগে মাওয়ায় সেতু এলাকায় পদ্মা সেত নামফলক উম্মোচন,রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন ও পদ্মা সেতুর ৬০ ভাগ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ঘোষনা করবেন এছাড়া ১৩০০ মিটার দৈর্ঘের স্থায়ী নদীতীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ উদ্বোধন এবং ১০ হাজার ৮৪ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে রোডের চলমান কাজ পরিদর্শন করবেন।পরে ঢাকা-মাওয়া টোলপ্লাজা সংলগ্ন গোল চত্বর এলাকায় আয়োজিত সুধী সমাবেশ বক্তব্য রাখবেন বলে কর্মসূচি চূড়ান্ত রয়েছে।বিকেলে মাদারিপুর জেলার শিবচরে কাঠালবাড়ী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে,ব্যানার-ফেস্টুন আর উন্নয়নমূলক কাজের পরিচিতি সম্বলিত প্রচারপত্রে এলাকা ছেয়ে গেছে।প্রধানমন্ত্রীর সফরকে স্বার্থক করতে স্থানীয় নানা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দফায়-দফায় বৈঠক করেছেন,ব্যস্ত সময় পার করছেন। এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর কর্মকান্ড সূচারুরুপে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে।এলাকা জুড়ে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ভূমিকায় দেশীয় অর্থায়নে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ এই প্রকল্পের নির্মাণকাজের ৬০ ভাগ এবং মূল সেতুর ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।এর আগে ২০০১ সালের ১২ জুলাই মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্র¯তর স্থাপন করে ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তন হলে ৯ বছর কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি।২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর ফের সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঋণ চুক্তি বাতিল করে। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে ২০১৩ সালের ৪ মে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।নানা ষড়যন্ত্র এবং প্রতিকূলতায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে এ অঞ্চলের মানুষ বেশ খুশি।মাওয়ায় ৪ ও ৫ নং খুটির সামনে ৬ষ্ট স্পান স্থাপনের কাজ চলছেএখন। এছাড়া জাজিরা প্রান্তে আরা ৫ টি স্পান উঠছে।ইতিমধ্যে ৩৭ থেকে ৪২ পর্যন্ত ৬ টি খুটিতে ৫ টি স্পান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।পদ্মা সেতুর ৪২টি খুটিতে ৪১ টি স্পান বসানোর কথা রয়েছে। এর মধ্যে ১৪ টি খুটি বসানোর কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।আর নদীতে ১৮০ টি পাইল স্থাপন করা হয়েছে।প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা থেকে ফরিদপুর,গোপালগঞ্জ,যশোর,খুলনা, ও দর্শনার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত রুটে রেল যোগাযোগ উন্নীত হবে। এ রুটে জাতীয় আঞ্চলিক ও আর্ন্তর্জাতিক ব্রডগেজ মালবাহী ও কন্টেইনার ট্রেন চলাচল করবে।এর ফলে সংশিষ্ট এলাকায় মানুষের জীবন মান ব্যপক অগ্রগতি হবে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সায়েলা ফারজানা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত নিরাপত্তা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।