 |
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী ও মহবুউল্যাহপুর গ্রামের পৃথক দুটি ধর্ষনের ঘটনায় ২ ধর্ষক এখনো অধরা। এতে ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ধর্ষনের শিকার প্রতিবন্ধী শিশু ও স্কুল ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, চৌমুহনী শহরের করিমপুর রোডের ভান্ডারী গ্যারেজে বাসের ভেতর ৮ বছরের প্রতিবন্ধী এক শিশু ধর্ষনের শিকার হয়। ১৯ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সন্ধায় এ ঘটনা ঘটার পর একটি মহন বিষয়টি ধামাচাপার চেষ্টা করলেও তারা সফল হয়নি। অবশেষ পর দিন বুধবার রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়। এদিকে মামলা হলেও ধর্ষক পারভেজ(৩৮) এখনো অধরা। এমতাবস্থায় ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চৌমুহনীর সচেতন মহল ও ধর্ষিত শিশুর পরিবারের সদস্যরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষিত শিশুটির বাবা শরিফপুরের বাড়িতে অসুস্থ। তার মা ঝর্না বেগম মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোন মতে সংসার চানায়। তাদের ভাড়া বাসা ভান্ডারী গ্যারেজের দক্ষিণ পাশে। ঘটনার দিন সন্ধায় মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুটি বাসা থেকে বের হলে চৌমুহনীর করিমপুর গ্রামের আমিনাগো বাড়ির বদিরুজ্জামানের পুত্র লম্পট পারভেজ শিশুকে চা খাইয়ে ফুসলিয়ে গ্যারেজের একটি গাড়ির ভিতর নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে ধর্ষিত শিশুর হাতে ৭০ টাকা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে রাতেই নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বুধবারই শিশুটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় ধর্ষনের শিকার শিশুটির মা বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ধর্ষক পারভেজের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। যার নং-২৭, তাং-২০-১২-১৭ইং।
মামলার বাদী ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, আমরা গরীব মানুষ। ঘটনার পর থেকে নানা হুমকি ধমকি আসছে যেন মামলা না করি। কিন্তু আমার মেয়ের সর্বনাশকারীর বিচার বিচারের আশায় মামলা করেছি। আমরা যেন ন্যায় বিচার পাই।
অপরদিকে চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ মামলাটির তদন্ত করছেন চৌমুহনীর পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই মোস্তাক আহমেদ। তিনি জানান, ঘটনার পর পরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। প্রথমিক ভাবে ধর্ষনের ঘটনার মতোই মনে হচ্ছে। দুই এক দিনের মধ্যে আশা করি ডাক্তারী রিপোর্ট পাওয়া যাবে। আসামী গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মহবুউল্যাহপুর গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষক একই গ্রামের নুরুর ইসলামের নতুন বাড়ির নুরুল ইসলামের পুত্র স্থানীয় আবদুল মজিদ(৩৫)। সম্প্রতি এই ধর্ষনের ঘটনা ঘটলেও লোক লজ্জার ভয়ে স্কুল ছাত্রীর পরিবার বিষয়টি চেপে যায়। কিন্তু গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে রান্না ঘরে লম্পট মজিদ আবারো ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। স্কুল ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে মজিদ পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে মজিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। যার নং-২৮, তাং-২০-১২-০১৭ইং।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষক আবদুল মজিদ একজন দূ:চরিত্রের লোক। বিভিন্ন ভাবে এলাকার নিরীহ নারীদের ফুসলিয়ে অপকর্ম করে থাকে। তার জ¦ালায় অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। এলাকাবাসী লম্পট মজিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লার সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, পৃথক ধর্ষনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে, পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।